কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
টানা দু’মাস ধরে লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় মানুষের রুজিরুটি। এ পরিস্থিতিতে হিমশিম দশা রাজ্যের অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র শহর শিলিগুড়ির। উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার শিলিগুড়ি শহরের ব্যবসা লকডাউনের কারণে এতদিন কার্যত ধুঁকছিল। কেন্দ্র-রাজ্য পর্যায়ক্রমে নির্দেশ দিতেই দোকান-পাট খুলতে শুরু করেছে। যানবাহনও ধীরে ধীরে রাস্তায় নামছে। তবে প্রাইভেট যানবাহনের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি অবশ্য পুলিস এখনও রেখেছে। আজ, বৃহস্পতিবার জামাইষষ্ঠী। তাই বুধবার শিলিগুড়িকে দেখলে মনেই হয়নি এই শহরেও লকডাউন চলছে। এদিন গতক’দিন অপেক্ষা গাড়ির সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। এনবিএসটিসি’র বাস চললেও সিটিঅটো কিংবা পাবলিক বাস রাস্তায় নামেনি। তবে সচেতন নাগরিকদের বক্তব্য, লকডাউনের চতুর্থ দফায় ধীরে ধীরে শহর স্বাভাবিক ছন্দে ফিরলেও রাস্তায় ভিড়ে সংক্রমণের আশঙ্কাও কিন্তু বাড়ছে।
এদিন শিলিগুড়ি শহরের বিধান মার্কেট, হাসমিচক, মহাবীরস্থান, এসএফ রোড সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকার বাজারগুলিতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বিধান মার্কেটের এক ব্যবসায়ী বলেন, দোকান খুলেছি। মানুষের ভিড় বেড়েছে। কিন্তু কেনাকাটা তেমন নেই। মানুষ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে চাইছে। সরকারি নিয়ম মেনে ভিড় এড়িয়ে মানুষ যাতে কেনাকাটা করতে পারেন তার ব্যবস্থা করেছি।
বিধান রোডের গৌরীশঙ্কর মার্কেটের হোলসেল জামা-কাপড়ের ব্যবসায়ী সৌম্যদীপ কুণ্ডু বলেন, দীর্ঘ দু’মাস পর দোকান খুললাম। আমাদের মার্কেট কমপ্লেক্সে যাঁরাই আসছেন তাঁদের থার্মাল স্ক্রিনিং করে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। এতে কিছুটা হলেও আমরা নিরাপদে আছি। পাশাপাশি আমরা আমাদের মতো করে সুরক্ষা ব্যবস্থা করে রেখেছি। নিয়মিত হাত স্যানিটাইজ করছি। ক্রেতাদের নিরাপদ দূরত্বে থাকতে বলছি। তবে বাজার স্বাভাবিক হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। যেভাবে ব্যবসায় লোকসন হল তাতে বিপুল ক্ষতির মুখে এসে দাঁড়িয়েছি।
এসএফ রোডের এক জামা-কাপড়ের দোকানদার বলেন, করোনাকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে যখন তখন ভয় করে আর কী হবে। যতটা সম্ভব নিজেদের সতর্ক হয়ে দোকানে বসতে হবে। নইলে দোকান বন্ধ রাখলে না খেতে পেয়ে মারা পড়ব। ক্ষুদিরামপল্লির এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী বলেন, কেনাকাটা নেই, দোকান খুলছি এটাই শান্তি আমাদের।
শিলিগুড়ি খুচরো ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বিপ্লব মুহুরি বলেন, এমনিতেই দোকানদাররা লোকসানে রয়েছেন। বাজার স্বাভাবিক করতে তাই সরকারি নিয়ম মেনে দোকান খোলা হয়েছে। বিভিন্ন বাজার, দোকান স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। সকলেই যাতে মাস্ক পরে তা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যদিও অভিযোগ, অনেকেই ঠিকমতো মাস্ক ব্যবহার করছেন না। রাস্তাঘাটে ভিড়ের জেরে সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিকরা। শহরের প্রবীণ শিক্ষক সুধীন সরকার বলেন, রাস্তাঘাটে লোকজনের আনাগোনা যেভাবে বেড়েছে তাতে সংক্রমণের ভয় তো বাড়ছেই। দোকান বাজার না খুললেও অর্থনীতির অবস্থা খারাপ হচ্ছে। অনেকেই পুলিস দেখলে মাস্ক ব্যবহার করছেন।
এই পরিস্থিতিতে একদিকে বাজার সচল রাখা অন্যদিকে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা কার্যত জোড়া চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের কাছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার অভিযান চালানো হচ্ছে। শিলিগুড়ির মহকুমা শাসক সুমন্ত সহায় বলেন, সরকারি নির্দেশ মেনে দোকান বাজার খোলা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজারগুলিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষকেও সতর্ক হতে হবে।