সংবাদদাতা, মাথাভাঙা: মেখলিগঞ্জের উছলপুকুরির ধুলিয়াহাট কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের পরিষেবা নিয়ে কিছুদিন ধরেই আবাসিকদের মধ্যে ক্ষোভ জমছিল। বুধবার সেই ক্ষোভ রাস্তায় নেমে আসে। এদিকে স্থানীয়দের দাবি, কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা আবাসিকরা কোনও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তাঁরা যখন তখন বাইরে বেরিয়ে আসছেন। এর প্রতিবাদে এলাকার লোকজন কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে কিছুটা দূরে কেশারহাট-ধুলিয়াহাটগামী রাস্তা পাল্টা অবরোধ করেন। মেখলিগঞ্জের বিডিও ঘটনাস্থলে এলে তাঁকে ঘিরেও তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। দু’পক্ষের এমন আন্দোলনে এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উছলপুকুরি এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিস পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। মহকুমা প্রশাসন জানিয়েছে, কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের আবাসিকদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
আবাসিকরা বলেন, খাবার ঠিকমতো দেওয়া হয় না, দু’দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই, পানীয় জল ঠিকমতো মিলছে না। তাই আমরা এদিন বাধ্য হয়ে রাস্তা অবরোধ করেছি।
স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণকান্ত রায়, সুবল রায় বলেন, আবাসিকরা বাইরে চলে আসছেন। এমনকী ওরা এদিন রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করল। ওদের মধ্যে কেউ করোনায় আক্রান্ত থাকলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা বলেছি, ওদের বাইরে বেরনো বন্ধ করতে হবে। কিন্তু প্রশাসন তা শুনছে না। বাধ্য হয়ে আমরা এদিন রাস্তা অবরোধ করি।
মেখলিগঞ্জের মহকুমা শাসক রামকুমার তামাং বলেন, রাতে ঝড়বৃষ্টির কারণে লোডশেডিং হয়েছে। তাই জল সরবরাহে সমস্যা হয়। তবে খাবার মান নিয়ে আমাকে কেউ কোনও কিছু জানাননি। এ ধরনের অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ধুলিয়াহাট কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে উছলপুকুরি গ্রাম পঞ্চায়েত সহ ব্লকের অন্যান্য কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভিনরাজ্য ফেরত শ্রমিকদের রাখা হয়েছে। ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে কোনও সীমানা পাঁচিল নেই। যেকারণে তাঁরা সহজেই বাইরে বেরিয়ে আসতে পারেন। আবাসিকদের অভিযোগ, প্রথম দিন থেকে এখানে নিম্নমানের খাবার দেওয়া হচ্ছে। এখানে পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, শৌচাগারও পরিষ্কার করা হচ্ছে না। তাছাড়া গত দু’দিন ধরে ঝড়বৃষ্টির কারণে লোডশেডিং হয়ে থাকবে। বিকল্প কোনও আলোরও ব্যবস্থা না থাকায় তাঁদের অন্ধকারে রাত কাটাতে হচ্ছে। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এরই প্রতিবাদে জানিয়ে এদিন সকালে একদফা বিক্ষোভ হয়। পরে ভবনের মূল গেট খুলতেই আবাসিকরা বাইরে বেরিয়ে পড়েন। অনেকেই খাবার কিনতে এলাকার দোকানে যান। কেউ কেউ বাজারের শৌচালয়েও ঢুকে পড়েন। এতে স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ে। নিজেদের দাবি জানিয়ে আবাসিকরা এলাকার রাস্তা অবরোধ শুরু করেন।
অন্যদিকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের আবাসিকরা বাইরে এসে বাজার সহ সর্বত্র ঘুরে বেড়ানোয় স্থানীয়রাও পাল্টা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিডিও সাঙ্গে ইউডেন ভুটিয়া খবর পেয়ে এলে তাঁকে ঘিরে কিছুক্ষণ বিক্ষোভ চলে। স্থানীয়রা বিডিও’কে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিরাপত্তা জোরদার করা সহ আবাসিকদের পরিষেবা উন্নত করার দাবি তোলেন। মেখলিগঞ্জ থানা থেকে বিশাল পুলিস বাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। দুপুর ১টা নাগাদ ধুলিয়াহাট মার্কেট কমপ্লেক্সের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পরে ৯৭ জন আবাসিককে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।