ইন্দ্র মহন্ত, বালুরঘাট, সংবাদদাতা: মালদহ সহ উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের উম-পুন ও করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এবার ওই তিন জেলা পরিদর্শনে আসছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৬ মে মালদহে আসবেন রাজীববাবু। সেখানে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকও করার কথা। তারপর ২৭ মে উওর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তিনি বৈঠক করবেন। গৌড়বঙ্গের তিন জেলায় ওই স্লাইক্লোনের ফলে চাষবাস সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক সারবেন। পাশাপাশি তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিও পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে। উম-পুন নিয়ে বৈঠক শেষ করে তিনি করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তিন জেলার রিপোর্ট খতিয়ে দেখবেন।
এব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, উম-পুন ও করোনা নিয়ে মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করব। আগামী ২৬ মে মালদহে ও ২৭ মে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বৈঠক করব। তিন জেলার জেলাশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা খতিয়ে দেখব। সেই রিপোর্ট নবান্নে পৌঁছে দেব। শুনেছি বোরো ধানে বেশি ক্ষতি হয়েছে। যাতে ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ পায়, সেই দিকে রাজ্য সরকার তৎপর রয়েছে।
জানা গিয়েছে, উম-পুনে তিন জেলায় যে ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে নবান্নের নির্দেশে মন্ত্রী মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সফরে আসছেন। প্রসঙ্গত, গত বুধবার পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়ে উম-পুন। দক্ষিণবঙ্গেই তার বেশি প্রভাব পড়লেও ঝাপটা লাগে গৌড়বঙ্গের তিন জেলাতেও। মালদহে প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন আম এবং ১ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন লিচু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ৫০০ হেক্টর জমির পটল, বরবটি, করলা, কুমড়ো, ঢ্যাঁড়শ এবং উচ্ছের ক্ষতি হয়েছে। ১৯০টি কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে। জেলাজুড়ে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনও কষা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মালদহ জেলা প্রশাসন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় এবার প্রায় এক লক্ষ হেক্টর বিঘে জমির বোরো ধান চাষ হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছিল ঝড়ের আগেই। বাকি ধান জমিতেই পড়ে ছিল। তাই সেই ধানের প্রায় সবটাই ঝড় ও বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। একইভাবে পাট চাষ ও সব্জিতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তপন সহ বংশীহারি বালুরঘাট, হিলি ব্লকের একাধিক এলাকার বাড়ির টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। বালুরঘাট শহর, গঙ্গারামপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। কয়েকটি প্রত্যন্ত এলাকায় ঝড়ের দিন তিনেক পরে বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। উত্তর দিনাজপুর জেলাতেও একই অবস্থা লক্ষ্য করা গিয়েছে। সেখানেও বোরো ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেই জেলায় ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। মোট জমির দুই থেকে চার শতাংশ জমির ফসল ক্ষতির মুখে পড়বে বলে চাষিদের আশঙ্কা।
সূত্রের খবর, মন্ত্রী জেলার শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ঝড়ের ফলে কোন এলাকায় কতখানি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার হিসেব নেবেন। উম-পুনের সঙ্গে সঙ্গে তিন জেলায় করোনা আক্রান্তের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা নিয়েও কথা বলতে পারেন মন্ত্রী। জেলাগুলির প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে যে মন্ত্রীর সফর নিয়ে তাদের জানানো হয়েছে। তারা সেই মতো প্রস্তুতি নিচ্ছে। সবকিছু খতিয়ে দেখে মন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্দেশও দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। মালদহের তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুর বলেন, মঙ্গলবার মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় আসছেন।