বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রতিবছর গুরুপূর্ণিমার দিন শ্রাবণী মেলার সূচনা হয়। মাস দেড়েক আগে থেকেই মেলা ঘিরে মন্দিরের কর্মকর্তাদের মধ্যে তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। তবে এ বছর এখনও কোনও উদ্যোগই শুরু হয়নি। মেলার আদৌ হবে কি না তা নিয়ে জল্পেশ মন্দির কমিটি দুশ্চিন্তায় রয়েছে। প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী শ্রাবণী মেলায় লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয়। শুধু জলপাইগুড়ি জেলারই বাসিন্দারা নন, অসম, সিকিম এমনকী নেপাল, ভুটান থেকে প্রচুর লোকসমাগম হয়। ভক্তরা তিস্তা নদীর ঘাট থেকে জল ভরে ১৫-১৬ কিমে হেঁটে মন্দিরে আসেন। রবিবার রাতভর হেঁটে সোমবার ভোরে শিবের মাথায় জল ঢেলে ফিরে যান। প্রশাসন নিরাপত্তা বলয়ে মন্দির সংলগ্ন এলাকা মুড়ে ফেলে। মন্দিরকে কেন্দ্রে করে প্রায় ৫০০ মিটার ব্যাসার্ধজুড়ে বসে মেলা। তারই প্রস্তুতি নিতে হয় মে মাস থেকে। কিন্তু এবার ওসব কিছুই নেই।
জল্পেশ মন্দির পরিচালন বোর্ডের চেয়ারম্যান গীরেন্দ্রনাথ দেব বলেন, রাজ্যের ঐতিহ্যবাসী মন্দিরগুলির মধ্যে জল্পেশ অন্যতম। প্রতিবছর শ্রাবণ মাসে এখানে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয়। সেই উপলক্ষে মেলাও বসে। আমরা তারজন্যই মে মাসেই বৈঠক করে প্রস্তুতি শুরু করি। কিন্তু এবার করোনা এবং লকডাউনে সবকিছু থমকে আছে। কারণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বিপুল লোক সমাগমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাবে না। এখনও ভক্তদের মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি রয়েছে। এমন অবস্থায় আমাদের মন্দিরের কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শ্রাবণী মেলা থেকে মন্দির কমিটির কিছু আয় হয়। তা দিয়ে বছরটা চলে। এবার যে কী হবে বুঝতে পারছি না। এখন নিয়ম মেনে মন্দিরের গেট বন্ধ করে পুজো হচ্ছে।
জল্পেশের পুরোহিত বিজয় চক্রবর্তী বলেন, আষাঢ় মাসের ২০ তারিখ গুরুপূর্ণিমা থেকে শ্রাবণী মেলা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু এবার কি হবে তা নিয়ে আমরা চিন্তিত।
মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দিরে মোট ২৯ জন কর্মী আছেন। তারমধ্যে সাতজন অস্থায়ী কর্মী। এখন মন্দিরে ভক্তরা প্রবেশ করতে পারছেন না। তাই প্রণামী বাক্সে কোনও টাকা নেই। বিদ্যুৎবিল, রক্ষণাবেক্ষণ খরচও উঠছে না। পুজোর সময়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে যে ১০ টাকা টিকিট কাটতে হয় তা মন্দিরের ফান্ডে জমা পড়ে। প্রণামীর টাকার একটা অংশ পুরোহিতরা পান। বাকিটা মন্দির ফান্ডে জমা রাখা হয়। কিন্তু এবার মেলা না হলে ওই টাকা আসবে না। মন্দির কমিটি জানিয়ছে, তারা করোনা মোকাবিলায় ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইমার্জেন্সি রিলিফ ফান্ডে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছে।