কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
তপন ব্লকের নিশ্চিন্তা এলাকার এক চাষি বাচ্চু সরকার বলেন, লকডাউনের জন্য এমনিতেই লঙ্কার দাম পাচ্ছি না। ৫০ কেজির বস্তার ৬০ টাকাও দাম দিতে চাইছে না কেউ। তার উপরে আবার কয়েক দিন আগে উম-পুন সব শেষ করে দিল। জমিতে জল জমে লঙ্কার গোড়াগুলি পচে গিয়েছে। এখন তো রাখাও যাবে না, বাইরেও এগুলি পাঠানো যাবে না। সেই কারণে প্রায় তিন কুইন্টালেরও বেশি লঙ্কা ফেলে দিয়েছি। এইবছর লঙ্কা চাষ করে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়লাম।
আরও এক চাষি তাহিমুদ্দিন সরকার বলেন, বিগত দিনে লঙ্কা চাষ করে ভালই লাভ হতো। আমাদের এখানকার লঙ্কা বাইরে অনেক জায়গায় যায়। দক্ষিণবঙ্গে যায়, ভিন রাজ্যেও যায়। কিন্তু এবার লকডাউনে জেরে পাইকাররা বাইরে লঙ্কা পাঠাতে পারছে না বলছেন। তাই তাঁরা লঙ্কা কিনতেও চাইছেন না। দামই পাচ্ছিলাম না। আবার উম-পুনের জেরে অনেক লঙ্কা জমিতেই পচে যাচ্ছে।।
গঙ্গারামপুর ব্লকের ফুলবাড়ির বাজারের লঙ্কার পাইকারি ব্যবসায়ী সাহাজাদ সরকার বলেন, অতিবৃষ্টির ফলে লঙ্কাগুলি পচে যাচ্ছে। সেই কারণে লঙ্কাগুলি আমরা বাইরে পাঠাতে পারছি না। অনেক সময় বাইরে পাঠালেও সেগুলি পথে নিয়ে যেতে যেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সেই কারণে আমরাও দাম পাচ্ছি না। কৃষকরাও লঙ্কার দাম পাচ্ছে না। যার ফলে অনেক লঙ্কা ফেলে দিতে হচ্ছে।
এবিষয়ে জেলা মুখ্য কৃষি অধিকর্তা জ্যোতির্ময় বিশ্বাস বলেন, উম-পুনের প্রভাবে লঙ্কা গাছের গোড়ায় জল জমে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রতিবছর এই জেলায় লঙ্কার ব্যাপক ফলন হয়। লকডাউনের জেরে লঙ্কা বাইরে যাওয়া বন্ধ ছিল। কিন্তু এখন দক্ষিণবঙ্গের দিকে লঙ্কার অনেক চাহিদা। তবুও কেন বাইরে পাঠানো যাচ্ছে না, সেই বিষয়ে আমি মার্কেটিং দপ্তরের দপ্তরের কথা বলব। কোনও একটা ব্যবস্থা করতে হবে চাষিদের যাতে লঙ্কা আর ফেলে দিতে না হয়।
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাজুড়ে প্রায় ২৫০০ হেক্টর জমিতে লঙ্কা চাষ হয়। প্রতিবছর ১০ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি লঙ্কার ফলন হয়। জেলার বহু কৃষক এই লঙ্কা চাষের সঙ্গে যুক্ত। সব থেকে বেশি লঙ্কার চাষ হয় তপন এলাকায়। এবছর আবার লঙ্কার ফলন বেশি হয়েছে। কিন্তু লকডাউন ও উম-পুনের প্রভাবে স্থানীয় বাজারে দাম একেবারেই কমে গিয়েছে। তাই লঙ্কাগুলি ফেলে দিচ্ছেন কৃষকরা। মাঝে মধ্যেই ফুলবাড়ির বাজার সংলগ্ন নর্দমা, জাতীয় সড়কের ধারে, রেললাইন সহ বিভিন্ন এলাকায় বস্তাভর্তি লঙ্কা ফেলে চলে যাচ্ছেন চাষিরা। শনিবারও তপন ব্লকের হজরতপুর অঞ্চলের মালঞ্চা এলাকায় অনেক চাষি লঙ্কা ফেলে দিয়ে চলে যান।