বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পরপর করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর মহকুমায়। জেলায় গত সাত দিনের মধ্যে মোট ছয় জনের দেহে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের খবর এসেছে। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনই গঙ্গারামপুর মহকুমার বাসিন্দা। বাকি একজনের বাড়ি কুমারগঞ্জ এলাকায়। তাঁরা প্রত্যেকেই পরিযায়ী শ্রমিক।
শুক্রবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের পাঠানো সোয়াব পরীক্ষার রিপোর্ট দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে আসে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর গঙ্গারামপুরের ওই পরিযায়ী শ্রমিককে চিহ্নিত করেছে। শ্রমিককে তুলে নিয়ে বালুরঘাটের রঘুনাথপুরে কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিক। ভিন রাজ্য থেকে কাজ করে তিনি সম্প্রতি জেলায় ফিরেছেন। গঙ্গারামপুর ব্লকের ওই শ্রমিকের বাড়ি বাসুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এছাড়া অন্য যে দু’জনের প্রাথমিক রিপোর্টে করোনা পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের বাড়ি বেলবাড়ি এলাকায়।
প্রসঙ্গত, এই নিয়ে জেলার মোট তিন জন করোনা আক্রান্তকে বালুরঘাট কোভিড হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে। বাকি কুশমণ্ডি ব্লকের তিন পরিযায়ী শ্রমিক এখনও চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ কোভিড হাসপাতালে। পরপর গঙ্গারামপুর মহকুমা এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্য দপ্তরের কপালে। জেলার প্রতিটি ব্লকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের সোয়াব সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠালেও সকলের রিপোর্ট এসে পৌঁছয়নি জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে। গঙ্গারামপুর ব্লক ও শহর এলাকায় করোনা আক্রান্তের খবর চাউর হতেই আতঙ্কের পরিবেশ তৈরী হয়েছে। গঙ্গারামপুর শহরের বুকে তার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। শনিবার দুপুরের পর থেকেই শহরের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। প্রয়োজন ছাড়া শহরবাসীকে বিশেষ দেখা যায়নি রাস্তায়।
দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক নিখিল নির্মল বলেন, করোনা আক্রান্তের বিষয় জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সম্পূর্ণ তথ্য জানাবেন। রাজ্যের নিয়ম অনুযায়ী রাজ্য মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করার পর জেলা থেকে জানানো হবে। এবিষয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে একাধিকবার ফোন ও মেসেজ করা হলেও তিনি নতুন করোনা আক্রান্তের বিষয় কিছু জানাতে চাননি। তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গারামপুর ব্লকের তিনজন পরিযায়ী শ্রমিকই ভিন রাজ্য থেকে এসে হোম কোয়ারেন্টাইন ও ফেসিলিটি কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। বাসুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পরিযায়ী শ্রমিক হরিয়ানা থেকে গত ১৪ তারিখে দক্ষিণ দিনাজপুরে আসেন। ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তর ওই শ্রমিকের লালারস নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিল। তাঁর রিপোর্ট সেখান থেকেই পজিটিভ এসেছে। এছাড়া বেলবাড়ি এলাকার দুই শ্রমিক মহারাষ্ট্র থেকে গত ২২ তারিখ আসেন জেলায়। ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তর তাঁদের সোয়াব সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বালুরঘাটে পাঠিয়েছে। আক্রান্ত শ্রমিকদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করছে জেলা ও মহকুমা প্রশাসন।