কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর ঈর্ষার কারণে সম্মানহানি হবে। ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ লাভ না হলেও মন্দ হবে না। দীর্ঘ ... বিশদ
প্রায় দেড় মাস আগে শিলিগুড়ি শহরে করোনা ছোবলে একজনের মৃত্যু হয়। আক্রান্ত তিনজন রোগীও সুস্থ হয়ে ওঠেন। মাঝখানে বেশ কিছুদিন করোনা আক্রান্ত কোনও রোগীর হদিশ মেলেনি। গত রবিবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে শহরে নতুন করে আক্রান্ত চারজন রোগীর হদিশ মেলে। এরপরই কোভিড মোকাবিলায় নড়েচড়ে বসেছে শিলিগুড়ি পুরসভা। তারা এ ব্যাপারে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে।
প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, করোনার পরীক্ষা যতটা বাড়বে, মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবাও ততটা প্রদান করা যাবে। তাই পরীক্ষা ও চিকিৎসা বাড়াতে অ্যাকশন প্ল্যান বানানো হচ্ছে। অর্থাৎ দ্রুত রোগীকে চিহ্নিত করা ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য ইতিমধ্যে পুরসভার তিনটি আরবান প্রাইমারি হেল্থ সেন্টারে সোয়াব সংগ্রহের কিয়স্ক চালু করা হয়েছে। করোনা উপসর্গ ও উপসর্গহীন বাসিন্দাদের সোয়াবের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। র্যা ন্ডাম সোয়াব সংগ্রহের জন্য আরও কয়েকটি কিয়স্ক চালু করা হবে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য দপ্তর ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। তাদের কাছ থেকে পরামর্শও নেওয়া হবে।
শুধু সোয়াব সংগ্রহ নয়, আমজনতার পাশে দাঁড়াতেও বেশকিছু পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা। প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্ত ফল ব্যবসায়ীর সংস্পর্শে আসা বেশ কয়েকজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। তাঁরা যাতে বাড়ি থেকে না বেরন সেজন্য ওই বাড়িগুলিতে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এছাড়া লকডাউন পর্বে শহরের কিছু দুঃস্থ এবং কন্টেইনমেন্ট এলাকার কাছে জনতা বাজার বসানো হবে। সেই বাজারে টেবিল পেতে ৫০-১০০টি খাবারের প্যাকেট রাখা হবে। তাতে চাল, ডাল, আলু, তেল, নুন সহ সব্জি থাকবে। বাসিন্দারা নিজেরাই ওই প্যাকেট নিয়ে বাড়ি যাবেন।
এছাড়া, যাঁরা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে এবং হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন, তাঁদের মনোরঞ্জনের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, একঘেয়েমি কাটাতে কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাসিন্দাদের অনলাইনে দেখানো হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পাশাপাশি মনোবল চাঙ্গা রাখতে কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ রাখা হবে। সমগ্র পরিকল্পনা সুষ্ঠুমতো বাস্তবায়িত করতে গড়া হবে বিশেষ মনিটরিং কমিটি। তাতে ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটার, ওয়ার্ড কমিটি, স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও মহিলা আরোগ্য সমিতির সদস্যদের যুক্ত করা হবে। কর্মসূচির বিভিন্ন দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের নাম ও ফোন নম্বরের তালিকাও প্রকাশ করা হবে। সেখানে যোগাযোগ করে সহযোগিতা নিতে পারবেন বাসিন্দারা।
তাছাড়া, মনিটরিং কমিটির সদস্যরা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে করোনা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান চালাবেন। আর পুরসভার পাঁচটি বরো কমিটির দায়িত্বে থাকবেন বোর্ডের সাতজন সদস্য। তাঁরা সমগ্র কর্মসূচি তদারকি করবেন। বোর্ডের চেয়ারম্যানের দাবি, রাজ্যের মধ্যে এই পুরসভাতেই কোভিড মোকাবিলায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, এ ব্যাপারে প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অশোকবাবুকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিরোধীরা। পুরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা তৃণমূল কংগ্রেসের রঞ্জন সরকার বলেন, জানুয়ারি মাস থেকে কোভিড মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়ার দাবিতে পুরসভায় একাধিকবার গলা ফাটিয়েও লাভ হয়নি। তখন অশোকবাবুরা ঘুমিয়ে ছিলেন। এখন রাজ্য সরকারের পরামর্শে তিনি নড়েচড়ে বসেছেন। আমাদের সরকার যা চাইছে, উনি সেই উদ্যোগই নিয়েছেন। এক্ষেত্রে তাঁকে সহযোগিতা করব।