বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে দেশজুড়ে শুরু হয়েছিল লকডাউন। লকডাউনের আগে-পরে ভিনরাজ্য থেকে হাজার হাজার শ্রমিক বাগানগুলিতে ফিরেছেন। যাঁরা পেট চালাতে পাড়ি দিয়েছিলেন ভিনরাজ্যে তাঁরা বাগানে ফেরায় স্বাস্থ্য দপ্তর সহ বিভিন্ন মহল তাঁদের শরীরে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন ছিল। কিন্তু চা শ্রমিক মহল্লায় আজও করোনার কোন কেস ধরা পড়েনি। এটাই সকলের কাছে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
আলিপুরদুয়ার জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, মারণ ভাইরাস করোনার প্রাদুর্ভাবে আমাদেরও সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ ছিল চা বাগান শ্রমিকদের নিয়েই। কিন্তু ভালো লাগছে এখনও পর্যন্ত কোনও চা শ্রমিকের করোনা ধরা পড়েনি। বাইরে থেকে ফেরা শ্রমিকদের স্ক্রিনিং করছি। আশাকর্মীরা ওঁদের নজর রাখছে।
লকডাউনের জন্য প্রথমদিকে চা বাগান বন্ধ ছিল। ফলে ওই সময়ে কাজ না থাকায় শ্রমিকদের মধ্যে খাদ্য সঙ্কটেরও আশঙ্কা করেছিল বিভিন্ন মহল। কিন্তু শ্রমিকরা ঘরে বসেই রাজ্যের দেওয়া চাল আটা নিঃশুল্ক পেয়ে যাচ্ছেন। এখন ৫০ শতাংশ শ্রমিক দিয়ে বাগানে কাজ চলছে। লকডাউনে রাজ্য সরকারের কড়া নির্দেশে চা মালিকরা শ্রমিকদের পাক্ষিক মজুরি সময়মতো দিচ্ছেন।
চা বাগান তৃণমূল কংগ্রেস মজদুর ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তর ও শ্রমিকদের খাদ্যের জোগান নিয়ে রাজ্য সরকার প্রথম থেকেই সতর্ক ছিল। যার সুফল পাচ্ছেন শ্রমিকরা। লকডাউন চললেও চা বাগানগুলিতে শ্রমিকদের খাবারের কোনও সমস্যা তাই নেই।
উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থেকে আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে সরকারিভাবে ৩০২টি চা বাগান আছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষের রুটি রুজি। কিছু বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই বাইরে শ্রমিকের কাজে চলে গিয়েছেন। কোনও শ্রমিকের পরিবারের একাধিক সদস্য ভিনরাজ্যে কাজে গিয়েছেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে ওদিকেও কাজ হারিয়ে তাঁরা ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরছেন।
চা বাগানে এখনও পর্যন্ত করোনা ধরা না পড়ার পেছনে ওয়াকিবহাল মহল একবাক্যে স্বীকার করছে, শহরাঞ্চলের চেয়ে চা মহল্লাতে কঠোরভাবে লকডাউন মানা হচ্ছে। করোনার আঁচ এড়াতে শ্রমিকরা প্রথম থেকেই বাগানে বাইরের লোক ঢোকা আটকাতে বিভিন্ন শ্রমিক লাইন বাঁশ দিয়ে আটকে রেখেছে। এদিকে লকডাউনে শ্রমিকরা এএওয়াই কার্ডে পরিবার পিছু ১৫ কেজি চাল ও ১৯ কেজি আটা পাচ্ছেন। আরকেএসওয়াই কার্ডে মাথা পিছু পাঁচ কেজি চাল মিলছে। এছাড়া, যাঁদের রেশন কার্ড বা টোকেন নেই তাঁরা পাচ্ছেন ব্লক প্রশাসন থেকে ত্রাণের চাল, ডাল ও আটা।