বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
ভিন রাজ্যে থাকাকালীন লকডাউনের মধ্যে তাঁদের চরম সমস্যায় পড়তে হয়েছিল বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন। খাদ্য এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যাপক অভাব তো ছিলই, সেইসঙ্গে আরও অন্যান্য সমস্যারও মোকাবিলা করতে হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, গত বুধবার সন্ধ্যায় এই ট্রেনটির ঢোকার কথা থাকলেও এদিন দুপুর দু’টো নাগাদ ট্রেনটি রায়গঞ্জ স্টেশনে পৌঁছয়। মূলত উম-পুন এই ঘটনার জন্য দায়ী বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ট্রেন স্টেশনে পৌঁছনোর পর রায়গঞ্জ পুরসভা এবং প্রশাসনের তরফে ট্রেনে করে আসা শ্রমিকদের এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্য খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি আগত শ্রমিকদের উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগমের বাসে তুলে নিজের নিজের গন্তব্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেই সকল এলাকায় স্বাস্থ্য দপ্তরের স্থানীয় প্রতিনিধিরা তাঁদের পরীক্ষা করে বাড়ি পৌঁছে দেবেন বলে জানা গিয়েছে।
এবিষয়ে রায়গঞ্জ পুরসভা চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, ট্রেনে করে যে সকল শ্রমিক ভাইরা এদিন রায়গঞ্জ স্টেশনে পৌঁছেছেন, তাঁদের জন্য আমরা অধীর আগ্রহে গত বুধবার থেকে অপেক্ষা করছিলাম। ট্রেনটি প্রায় ১৭-১৮ ঘণ্টা দেরিতে রায়গঞ্জ স্টেশনে পৌঁছেছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে আমাদের কর্মীরা তাঁদের খাওয়ার দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি বাসে চড়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাওয়ার জন্যও তাঁদের সাহায্য করা হয়েছে।
এদিকে ট্রেনে চেপে দিল্লি থেকে রায়গঞ্জে ফেরা জাহিদ আলম বলেন, আমি প্রায় ছয় মাস আগে দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলাম। এরপর সেখানে লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় আমরা পুরোপুরি আটকে যাই। কারখানা থেকে আগে একটা থাকার জায়গা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন পর সেখানে আর আমাদের থাকতে দেওয়া হয়নি। খাবার দাবারের খুবই অসুবিধা ছিল। ট্রেন চালু হওয়ায় আমরা এযাত্রায় বেঁচে গেলাম।
আরও এক যাত্রী বলেন, আমরা দিল্লিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলাম। এখানকার এক ঠিকাদার সংস্থা আমাদের সেখানে পাঠিয়েছিল। দিল্লি যাওয়ার মাস চারেকের মধ্যেই লকডাউন শুরু হয়ে যায়। তারপর থেকে দিল্লিতেই আটকে ছিলাম। ট্রেনে চেপে শেষপর্যন্ত বাড়ি ফিরতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। একসময় মনে হচ্ছিল আর পরিবারের কাছে পৌঁছতে পারব না। তবে এখন কিছুটা নিশ্চিন্ত বোধ করছি।
এর আগে গত মঙ্গলবার পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে একটি ট্রেন এসেছিল রায়গঞ্জে। তারপর এদিন আরও একটি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন এল স্টেশনে। উত্তর দিনাজপুর সহ পাশের রাজ্য বিহারেরও একাধিক শ্রমিকদের নিয়ে আসা হয়েছে এই স্পেশাল ট্রেনটিতে। বৃহস্পতিবার দুপুরে দেড়টা নাগাদ রায়গঞ্জ স্টেশনে ট্রেনটি এসে পৌঁছয়। দিল্লি থেকে প্রায় ২৩৭ জনকে নিয়ে ট্রেনটি এসেছে। ট্রেন থেকে নামার পর পরিযায়ী শ্রমিকদের স্ক্রিনিং করা হয়। তারপর তাঁদের নির্দিষ্ট বাসে তুলে গন্তব্যে পাঠানো হয়। সেখানেও নামার পর স্ক্রিনিং করা হবে এবং তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। যদি মনে হয় যে কারও শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাহলে তাঁকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হবে। না হলে তাঁদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হবে।