গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, আমাদের জেলায় প্রচুর পরিমাণে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। ফলে রোগ ধরা পড়ছে বেশি। এখনও পর্যন্ত মালদহ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রায় ১০ হাজার জনের নমুনা সংগ্রহ করেছে। যা জেলাস্তরে কার্যত রেকর্ড।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি ডাঃ অমিত দাঁ বলেন, বুধবার গৌড়বঙ্গের জেলাগুলি থেকে নেওয়া নমুনা পরীক্ষার পর মোট ১৫ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। তারমধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের একজন করে রোগী রয়েছেন। বাকি ১৩ জন মালদহের বাসিন্দা। আক্রান্তদের বাড়ি কালিয়াচক-১, মানিকচক, হরিশ্চন্দ্রপুর-১ প্রভৃতি ব্লক এলাকায়।
প্রসঙ্গত, মালদহে করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ মারাত্মক হয়ে উঠছে। পুলিসের হিসাবে, ইতিমধ্যে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক ভিনরাজ্য এবং অন্য জেলা থেকে মালদহে ফিরেছেন। তাঁদের মধ্যে অবশ্য অনেকেই প্রশাসনকে না জানিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছেন। তাঁদের নিয়ে জেলা পুলিস এবং প্রশাসনের কর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। পরীক্ষা না হওয়া পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজেদের অজান্তেই জেলায় করোনা ছড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, লকডাউন শুরুর পর কিছুদিন ব্যাপক কড়াকড়ি করা হয়। ওইসময় জেলার বাইরে থেকে তেমন কেউ মালদহে যাতায়াত করতে পারেননি। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর ব্যাপারে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হতেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ভিন জেলা থেকে দলবেঁধে শ্রমিকরা জেলায় ফিরতে শুরু করেন। ভিনরাজ্যে কর্মরতরাও বাড়িমুখো হন। ওইসময় বাস সহ অন্যান্য যানবাহনে প্রতিদিন শতাধিক শ্রমিক ফিরছিলেন। ওইসময় পর্যন্ত বিষয়টি আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। প্রায় প্রত্যেকেরই নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছিল। তারপর ট্রেনে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর পালা শুরু হয়। বর্তমানে দৈনিক গড়ে দুই হাজার শ্রমিক জেলায় ফিরছেন। ট্রেন থেকে অন্য জেলায় নেমে বাসে তাঁরা মালদহে ঢুকছেন। আমাদের হিসাবে সবমিলিয়ে ইতিমধ্যে মালদহে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক ফিরেছেন।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, বর্তমানে সবার পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। আগের তুলনায় পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লেও তা সর্বোচ্চ সীমাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে না। এদিকে, জেলায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাতে রাশ টানা যাচ্ছে না। ফলে বর্তমানে একমাত্র উপসর্গ রয়েছে এমন পরিযায়ী শ্রমিকদেরই নমুনা আমরা পরীক্ষা করছি। এরফলে ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। কারণ বহু করোনা আক্রান্তের উপসর্গ থাকছে না। অথচ ভাইরাস তাঁদের শরীরে বাসা বেঁধে থাকছে। তাঁদের থেকে ভাইরাস সহজেই পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীদের শরীরে প্রবেশ করবে। ফলে বাইরে থেকে আসার পর নিজেকে অন্তত ১৪ দিন পৃথক রাখাই একমাত্র উপায়। তাহলেই অন্যদের বাঁচানো সম্ভব। তা না হলে জেলায় করোনা মহামারীর আকার নিতে পারে।