গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
জুন মাস থেকেই আমন ধানের মরশুম শুরু হতে চলছে। টানা দেড় মাস লকডাউনের কারণে অনেক কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কৃষকরা আমন ধান চাষের প্রতি আগ্রহ হারাতে পারেন এমনই আশঙ্কা করছে কৃষি দপ্তর। এই পরিস্থিতিতে ব্লক কৃষি দপ্তরের কর্তারা বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের আমন ধান চাষের বিষয়ে আগ্রহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।
আলিপুরদুয়ার জেলার ১ লক্ষ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। জেলার কুমারগ্রাম ব্লকের কামাখ্যাগুড়ির কৃষক শ্রীচরণ রায় বলেন, জমির ফসল বিক্রি করে লাভের টাকা দিয়েই আমরা পরবর্তী চাষের কাজে হাত দিই। আমি আমার দু’বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছিলাম। কিন্তু লকডাউনের কারণে ভুট্টার দাম পাচ্ছি না। এবার আমন ধান চাষ করব। কিন্তু বীজ পাচ্ছি না। আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের বনচুকামারি গ্রামের কৃষক সুভাষচন্দ্র ঘোষ বলেন, সরকারিভাবে আমন ধানের বীজ পাচ্ছি না। বাইরে থেকে কেনা বীজ দিয়ে চাষ করে আমন ধানের ভালো ফলন পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আমরা বিষয়টি কৃষি দপ্তরে জানানিয়েছি। দপ্তরের আধিকারিকরা আমাদের চাষের বিষয়ে নানান তথ্য ভিডিও কনফারেন্সে সরবরাহ করছেন।
আলিপুরদুয়ার জেলা কৃষি অধিকর্তা হরিশ চন্দ্র রায় বলেন, কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করার জন্য অন্যান্য বছরের মতো এবার অত আমন ধানের বীজ আসেনি। অল্প কিছু বীজ এসেছে। কৃষকবন্ধু প্রকল্পে কৃষকদের আড়াই হাজার টাকা করে বছরে দু’বার করে মোট ৫০০০ টাকা দিচ্ছি। জেলার প্রায় ৪০ হাজার কৃষককে চাষের জন্য ওই প্রকল্পে টাকা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও কম পরিমাণে হলেও এবার কৃষক বন্ধু প্রকল্পের কিছু সুবিধা এসেছে। চাহিদা অনুযায়ী সেগুলি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কৃষকদের দিয়ে দেওয়া হবে। আমরা কৃষকদের নানা ভাবে চাষের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করছি।
আলিপুরদুয়ার-১ ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা অজিত রায় বলেন, সরকারিভাবে এবার কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কৃষকদের ঋণ দেওয়ার উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বেশি সংখ্যক কৃষককে ওই প্রকল্পের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আমন ধান চাষ নিয়ে ব্লকের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে আমরা সমস্যার মেটানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমন ধান চাষের বিষয়ে প্রতিনিয়ত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
প্রতিবছর কৃষি দপ্তর থেকে সরকারিভাবে উন্নতমানের আমন ধানের বীজ কৃষকদের বিনামূল্যে দেওয়া হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে কৃষকদের বীজ দেওয়া হয়নি। বাইরে থেকে কেনা বীজের উপরে কৃষকরা ভরসা করতে পারছেন না। যদিও কোথায় সার্টিফায়েড বীজ পাওয়া যাবে সেই বিষয়ে কৃষি দপ্তরের তরফে কৃষকদের বলে দেওয়া হচ্ছে। এদিকে সরকারিভাবে বীজ না পেয়ে কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।