বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালিহারা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নেই বলে অভিযোগ তুলে এদিন সকালে হরিরামপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের আবাসনে এসে স্থানীয়রা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বিক্ষোভ চলাকালীন আতঙ্কিত হয়ে ফেসবুক লাইভ করে সাহায্য চান খোদ বিএমওএইচ। পরে অবশ্য স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হন। এদিকে একে করোনার মতো অতিমারীর মোকাবিলা করতে হচ্ছে, তার মধ্যে এ ধরনের ঘটনায় তাঁদের মনোবলে চিড় ধরছে, এই অভিযোগ তুলে আবার কর্মবিরতি পালন করতে শুরু করেন হরিরামপুর হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেক্ষেত্রেও হস্তক্ষেপ করতে হয় স্থানীয় প্রশাসন ও মহকুমা শাসককে। তারপরে অবশ্য আবার কাজে যোগ দেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
গঙ্গারামপুর মহকুমা শাসক মানবেন্দ্র দেবনাথ বলেন, আমাদের কাছে খবর আসে যে, কিছু লোক হরিরামপুরের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের আবাসন ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। আমি ঘটনার কথা জানার সঙ্গে সঙ্গে হরিরামপুর থানার পুলিসকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা বলি। পরে পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছে। করোনার মতো পরিস্থিতিতে ডাক্তাররা সবরকমভাবে আমাদের সাহায্য করে চলেছেন। আমি নিজে গিয়ে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মনোবল বাড়িয়েছি। যেসব স্বাস্থ্যকর্মী কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেছি। পুনরায় তাঁরা কাজ শুরু করেছেন। এমন ঘটনা কেন ঘটল, জেলা প্রশাসনের তরফে তার রিপোর্ট তলব করেছে। লকডাউনের মধ্যেও কীভাবে ডাক্তারের আবাসনে জমায়েত হল, সেবিষয়টিও খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
হরিরামপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌভিক আলম বলেন, আমি সকালের দিকে আবাসনে ছিলাম। সেসময় বালিহারা এলাকার গ্রামবাসীরা জমায়েত করে আমার ঘরের কড়া নাড়তে থাকেন। আমি বেরিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁরা অকথ্য ভাষায় আমাকে গালাগালি করেন। বালিহারা হাসপাতালে ডাক্তার নেই কেন, তার কৈফিয়ৎ চান। আমি ওদের ঘরের বাইরে যাওয়ার কথা বলি। আমি একা থাকায় নিরাপত্তার অভাববোধ করি। ফেসবুক লাইভ করে ঘটনাটি তুলে ধরে সাহায্য চাই। যেকোনও মুহূর্তে আমার উপর হামলা হয়ে যেতে পারত এদিন। গ্রামবাসীরা অফিসে এসে কথা বলতে পারতেন। আমার আবাসনেই আমাকে হুমকির মুখে পড়তে হল। বালিহারা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে ডাক্তার নেই। জেলা প্রশাসন সমস্ত বিষয় জানে। হরিরামপুর গ্রামীণ হাসপাতালও আমি জোড়াতালি দিয়ে চালাচ্ছি। করোনা পরিস্থিতিতে ব্লকের মানুষ যাতে সুস্থ থাকেন, সেজন্য দিনরাত এক করে কাজ করছি। কিন্তু এদিনের ঘটনায় আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। পুলিস প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করব এদিনের ঘটনা নিয়ে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, হরিরামপুরে কিছু লোক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের আবাসনে এসেছিল। একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বালিহারা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দীর্ঘদিন থেকে আমরা ডাক্তার দিতে পারছিলাম না। সেকারণে এলাকাবাসীর খুব সমস্যা হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছি। খুব দ্রুত সেখানে ডাক্তার চলে আসবে। আমরা বালিহারা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র খুলে দিতে পারব।
এদিন সকালে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের আবাসনে একদল গ্রামবাসী এসে বালিহারা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলার জন্য হুমকি দিতে থাকে। অথচ ঢিল ছোড়া দূরত্বে হরিরামপুর থানা থাকলেও কোনও পুলিসকর্মীকে প্রথমদিকে সেখানে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। এদিন সৌভিকবাবুর ফেসবুক লাইভটি ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।