কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
ওই গ্রামের ইটভাটার শ্রমিক রামচন্দ্র মুসহর বলেন, লকডাউনের ফলে ইটভাটা বন্ধ রয়েছে। কাজ হারিয়ে বাড়িতে বসে আছি। সংসারে স্ত্রী ও তিন নাবালক সন্তান রয়েছে। তাঁদের দু’বেলা পেট পুরে খাওয়াতে পারছি না। রেশনের চাল, ডালও শেষ হয়ে গিয়েছে। ওই গ্রামের বাসিন্দা গৃহবধূ আরতি দাস, শান্তি দাসরা জানান, লকডাউনের দু’সপ্তাহ কেটে গেল। এখনও পর্যন্ত পঞ্চায়েত সদস্য বা প্রধান এলাকা পরিদর্শন করেননি। আমাদের বাচ্চাদের ঠিক মতো খাবারটুকুও জুটছে না। করোনা ভাইরাসে না মরলেও ক্ষিদের জ্বালায় মরতে হতে পারে আমাদের। সরকারি ত্রাণের ব্যবস্থা না করলে আমরা বাঁচব কী ভাবে?
চাঁচল-১ ব্লকের বিডিও সমীরণ ভট্রাচার্য বলেন, মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বরতল গ্রামে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হবে। কেউ অনাহারে থাকবে না। প্রশাসন সকলের পাশে আছে।
এদিকে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত সদরের বাইশা গ্রামের বাসিন্দাদের একটা অংশও পেটের জ্বালায় গাছের পাতা সিদ্ধ করে খেতে বাধ্য হয়েছেন। লকডাউনের জেরে হারিয়েছে উপার্জনের উপায়। এদিকে ঘরে সঞ্চিত অর্থ বলেও কিছু নেই। তাই অগত্যা বাধ্য হয়ে পাতা সেদ্ধ খেয়ে পেট ভরিয়েছেন প্রায় একশ’ পরিবার। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ওই বাসিন্দাদের অসহায় অবস্থা খতিয়ে দেখে তাঁদের জন্য চাল, ডাল ও সাবানের ব্যবস্থা করা হবে। স্থানীয় থানার মাধ্যমে তাঁদের কাছে সেসব সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা থেকে ওই গ্রামের অভুক্ত পরিবারগুলিকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার বাইশা গ্রামের বাসিন্দাদের প্রত্যেককে ১২ কেজি চাল, পাঁচ কেজি আলু, দুইকেজি ডাল, সাবান ও মাস্ক প্রদান করা হয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক প্রশাসন ও থানার যৌথ উদ্যোগে এই ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। যাঁদের রেশন কার্ড নেই পুলিস প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সকলকেই ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
হরিশ্চন্দ্রপুর সদরের বাইশা গ্রামের বেদে সম্প্রদায়ের মানুষরা সাধারণত এলাকায় ঘুরে বেড়িয়ে সাপের খেলা দেখিয়ে বা ভিক্ষা বৃত্তি করে সংসার চালান। লকডাউনের জেরে বাইরে বের হতে পারছেন না। তাই উপার্জন বন্ধ। পেটে টান পড়েছে। বাধ্য হয়েই আমের কচি গুটি, গাছের পাতা সিদ্ধ করে লবন দিয়ে খেয়েছেন কেউ কেউ। বড়রা কোনওরকমে কষ্ট করে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটালেও ক্ষুধার্ত শিশুদের কান্নার রোল এলাকার বাতাস ভারী করে তুলেছে। বেদে সম্প্রদায়ের জগদীশ বেদ, শঙ্কর বেদ, উমনি বেদরা বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হোক। না হলে বাচ্চাদের নিয়ে আমরা না খেয়ে মরে যাব।