ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
মঙ্গলবার শিলিগুড়ি পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য শঙ্কর ঘোষ বলেন, লকডাউন পরিস্থিতিতে নাগরিকদের পাশে দাঁড়াতেই কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। তাতে নানারকম ফোন আসছে। তাছাড়া আমার কাছে, আমাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে এবং পার্টির ছাত্র ও যুব সংগঠনের কাছেও মানুষ সহযোগিতা চেয়ে ফোন করছেন। সেইমতো নাগরিকদের মধ্যে চাল, ডাল, তেল, আলু সহ খাদ্যসামগ্রী বিলি করছি। এদিন শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ ভারতনগরে, ৪ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় খাদ্যসামগ্রী বিলি করা হয়।
করোনা মোকাবিলায় লকডাউন লাগু হয়েছে। এ সময় নাগরিকদের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসনের পাশাপাশি শিলিগুড়ি পুরসভাও কন্ট্রোল রুম চালু করেছে। পুরভবনের নীচেরতলায় ওই রুম রয়েছে। চারজন পুরকর্মী সেখানে পালা করে বসছেন। তাঁদের একজন বলেন, লকডাউনের দু’দিন পরই একজন ফোন করে বাজারে মাছের দাম কত জানতে চেয়েছিলেন? আরএকজন হাসতে হাসতে ফোনে বলেছিলেন, হাটবাজার সব বন্ধ এখন কীভাবে সময় কাটাই বলুন তো। পুরকর্মীদের আরএকজন বলেন, মহিলার কণ্ঠে দু’জন ফোন করেছিলেন। হ্যালো বলার পর, টু-শব্দ নেই। ফোন কেটে দিয়েছেন। কয়েকজন ফোন করে টিভিতে চলা গানের অনুষ্ঠান শুনিয়েছেন। পুরকর্মীরা বলেন, কন্ট্রোল রুম চালুর পর প্রথম ক’দিন এমন অবাঞ্ছিত ফোন কল সামাল দিতেউ নাজেহাল হতে হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ মার্চ লকডাউন লাগু হয়। ২৪ মার্চ ওই কন্ট্রোল রুম চালু করে পুরসভা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন থেকে অবাঞ্ছিত ফোন কল বাদ দিয়ে জরুরি প্রয়োজনেও কল এসেছে প্রায় ৪৫টি। শিলিগুড়ি সংলগ্ন জলপাইগুড়ি জেলার গ্রামীণ এলাকা ফোকদইবাড়ি থেকেও কল এসেছে। সেখানকার একজন বাসিন্দা ফোন করে বলেছিলেন, জ্বর এসেছে। খাবার নেই, কী করব। সঙ্গে সঙ্গে পুলিস ও প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়। তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়। প্রতিবেশী জেলা উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর এবং সিকিম থেকেও ফোন করেছিলেন কয়েকজন দিনমজুর। তাঁরা শিলিগুড়ির বাসিন্দা। লকডাউনের জেরে তাঁরা সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে আটকে পড়েছিলেন। তাঁরা শিলিগুড়িতে ফেরার আর্জি জানিয়েছিলেন। এ বিষয়টিও পুরসভা থেকে প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল।
কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা বলেন, শিলিগুড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ফোন আসছে। কেউ রান্নার গ্যাস, কেউ খাবার, আবার কেউ ওষুধ চেয়ে ফোন করছেন। ওই সব বাসিন্দাদের নাম, ঠিকা নথিভুক্ত করার পর স্থানীয় কাউন্সিলারদের বিষয়গুলি জানানো হয়। কাউন্সিলাররা ওই বাসিন্দাদের কাছে গিয়ে চাল, আলু, ডাল, তেল বিলি করেছেন। কয়েকজনকে রান্নার গ্যাস ও জীবনদায়ী ওষুধের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এলাকায় জীবণুনাশক স্প্রে করার দাবি অনেকে করছেন। সেই মতো এলাকায় গিয়ে তা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দু’সপ্তাহ ধরে লকডাউন চলছে। কন্ট্রোল রুমও চালু রয়েছে। পুরকর্মীরা বলেন, এখন অবশ্য অবাঞ্ছিত কল আসা কিছুটা কমেছে। এখন লকডাউন ভঙ্গ করে কোথায় মানুষের জটলা হচ্ছে, কোথায় বাজার বসছে এসব কল আসার পাশপাশি কিছু মানুষ খাবার চেয়ে ফোন করছেন।