কর্মপ্রার্থীদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। প্রেম-প্রণয়ে আগ্রহ বাড়বে। নিকটস্থানীয় কারও প্রতি আকর্ষণ বাড়বে। পুরোনো কোনও বন্ধুর ... বিশদ
ক্যালেন্ডার অনুসারে আগামী ১৭ এপ্রিল (বাংলার ৪ বৈশাখ) শুরু হচ্ছে বিয়ের মরশুম। এ অবস্থায় করোনা ভাইরাস রুখতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নির্দেশে গোটা দেশের সঙ্গে উত্তরবঙ্গেও লকডাউন চলছে। এমন সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেকেই। সেই পরিবারগুলির মধ্যে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ শহরের বাসিন্দা সহদেব সাহা একজন। তিনি ও তাঁর স্ত্রী রাখী সাহা বলেন, ৫ মে (২২বৈশাখ) বড় মেয়ের বিয়ের দিন ঠিক করা হয়েছিল। ইতিমধ্যে রাঁধুনি, পুরোহিত, ডেকরেটার্স, বাজনা সব কিছুর বায়না দেওয়া হয়েছে। আমন্ত্রণপত্রও ছাপাতে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু করোনার জেরে বিয়ের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। পত্রপক্ষও তা মেনে নিয়েছে। লকডাউন ওঠার পর পুরোহিতের সঙ্গে কথা বলে নতুন করে বিয়ের দিন ঠিক করা হবে।
শিলিগুড়ির আরএক পরিবার ছেলের বিয়ে স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পরিবারের সদস্যরা বলেন, ৩ মে (২০বৈশাখ) বাড়ির বড় ছেলের বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিল। একদিন পরই ছিল বধূবরণের অনুষ্ঠান। বিয়ের অনুষ্ঠানের সবরকম প্রস্তুতি প্রায় শেষ হয়েছে। করোনা মোকাবিলা করতে তা পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আগামী নভেম্বর বা ডিসেম্বর মাসে তা করা হবে। শুধু হিন্দু পরিবার নয়, শিলিগুড়ি শহরের মুসলমান পরিবারও মেয়ের বিয়ের রিসেপশন পার্টি স্থগিত করেছে। শহরের আসরফ নগরের বাসিন্দা মহম্মদ জিয়াউল্লা বলেন, ১২ এপ্রিল শহরের একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে মেজ মেয়ের বিয়ের রিসেপশন পার্টি হওয়ার কথা ছিল। অনুষ্ঠানবাড়ি ভাড়া করার পাশাপাশি ক্যাটারার সংস্থার সঙ্গেও কথা হয়েছিল। আমন্ত্রণপত্রও ছাপানো হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু করোনা মোকাবিলায় ভিড় এড়াতেই ওই পার্টি বাতিল করা হয়েছে। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত পরিস্থিতি লক্ষ্য করব। এরপর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে অনুষ্ঠানের নতুন দিন ঠিক করা হবে।
প্রসঙ্গত, করোনার থাবা রুখতে মঙ্গলবার মধ্যরাত লকডাউন শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণা অনুসারে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন থাকবে। এই অবস্থায় শিলিগুড়ি সহ সমগ্র উত্তরবঙ্গবাসী জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বেরতে পারছেন না। শিলিগুড়ির একটি ক্যাটারার সংস্থার পক্ষে সঞ্জীবকুমার দাস বলেন, শিলিগুড়ি, ময়নাগুড়ি ও বীরপাড়া থেকে তিনটি বিয়ের অনুষ্ঠানের বরাত এসেছিল। লকডাউনের জেরে পার্টিরা অনুষ্ঠান স্থগিত করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কোনও অনুষ্ঠানই করা সম্ভব হচ্ছে না। কয়েকজন পুরোহিত বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণা অনুসারে লকডাউন ওঠার তিনদিন পর অর্থাৎ ১৭ এপ্রিল থেকে বিয়ের মরশুম শুরু। কিন্তু লকডাউনের মেয়াদ বাড়তেও পারে। সবদিক বিচার করে পাত্র-পাত্রী পক্ষকে এখন বিয়ের অনুষ্ঠান না করারই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অধিকাংশই অনুষ্ঠান স্থগিত করেছেন।