খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
শিলিগুড়ির পুলিসের ডিসিপি(পশ্চিম) কুনয়ার ভুষণ সিং বলেন, লকডাউনের পর শহরের অধিকাংশ রাস্তা ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। যে ক’জন পথচারী রাস্তায় আছেন, তাঁদের বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে। এরপরও যদি কেউ লকডাউন না মানেন তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে হয়নি।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যে জনতা কার্ফু পালন করা হয়েছে। এই অবস্থায় এদিন সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন রাস্তায় টোটো, সিটি অটো, বাস, বাইক সহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। রাস্তার পাশে থাকা চা ও পান এবং রুটি ও সব্জির দোকানে, হোটেলে, এমনকী বাজারগুলিতেও নাগরিকরা ভিড় করেন। পেট্রোল পাম্পেও জ্বালানি সংগ্রহের জন্য বাইক সহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের লম্বা লাইন চোখে পড়ে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই রাস্তায় ভিড় কমতে শুরু করে। বিকাল ৫টায় লকডাউন কর্মসূচি শুরু হতেই শহরের ‘লাইফ লাইন’ হিলকার্ট রোড প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট রাস্তার হাসমিচকে প্রচুর পুলিস মোতায়েন থাকলেও হাতে গোনা কয়েকজন পথচারী ছিলেন। তাঁদের বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠান পুলিস কর্মীরা। সেখান থেকে সেভক মোড়ের দিকে এগোনোর সময় তিন থেকে চারটি টোটো এবং কয়েকটি বাইক চোখে পড়ে। সেভক মোড়ে বাইক আরোহীদের ও টোটো চালকদের দাঁড় করিয়ে বাড়ি যেতে বলেন কর্তব্যরত পুলিস কর্মীরা। আশপাশের দোকানগুলির ঝাঁপ ছিল বন্ধ।
সেভক মোড় থেকে গান্ধীচকের দিকে যাওয়ার সময় রাস্তায় তেমন পথচারী দেখা যায়নি। গান্ধীচকের কাছে একটি পেট্রোল পাম্পে কিছু বাইক ও যানবাহনের লাইন দেখা যায়। তেল নেওয়ার পর বাইক ও যানবাহনের চালকদের বাড়িতে যাওয়ার পরামর্শ দেন পুলিস কর্মীরা। জোড়া মহানন্দা সেতু, মাল্লাগুড়ি মোড় প্রায় ফাঁকা ছিল। অন্যদিন দার্জিলিং মোড়ে তীব্র যানজট থাকলেও এদিন প্রায় শুনশান ছিল। এক-দু’জন টোটো ও সিটি অটো সেখানে ঘোরাঘুরি করলে কর্তব্যরত পুলিস কর্মীরা নিষেধ করার পর ওই টোটো ও সিটিঅটো চালকরা সেখান থেকে চলে যান।
একই রকম ছবি বর্ধমান রোড, বিধান রোড, এসএফ রোড, কাছারি রোড সহ গলির রাস্তাতেও তেমন যানবাহন ও পথচারীদের চোখে পড়েনি। জংশন, চম্পাসরি, কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম, মহকুমা পরিষদের কাছে, বাঘাযতীন পার্ক এলাকায় চা ও পানের কিছু দোকান খোলা ছিল। পুলিস কর্মীরা সেগুলি বন্ধ করে দেয়। পাশাপাশি, করোনা ভাইরাস এবং লকডাউন নিয়ে প্রচার অভিযানে নামে পুলিস ও স্বাস্থ্য কর্মীরা। শহরের প্রধান রাস্তাগুলির পাশাপাশি তাঁরা বিভিন্ন পাড়ায় মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর কালোবাজারি রুখতেও প্রচার করা হচ্ছে। শিলিগুড়ি পথি পাশ্বর্স্থ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মদন ভট্টাচার্য বলেন, করোনা ভাইরাসের ছোবল থেকে নিজেরা বাঁচতে এবং অন্যদের বাঁচাতেই লকডাউন কর্মসূচি পালন করছি। তবে, নিয়ম অনুসারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান খোলা রাখা হয়েছে।
শিলিগুড়ি পুলিসের এক অফিসার বলেন, রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুসারে এখন অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া সবকিছুই বন্ধ। আগামী ২৭মার্চ পর্যন্ত লকডাউন থাকবে। নির্ধারিত এই সময়ে শহরের রাস্তায় একসঙ্গে সাতজনের বেশি বাসিন্দা ঘোরাঘুরি করতে পারবেন না। কোথাও আড্ডা দিতে পারবেন না। এই সব নির্দেশ যাঁরা অমান্য করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে একাধিক আইন রয়েছে। তবে, এটা বাস্তবায়িত করা কঠিন। তাই লকডাউনের বিষয়ে বাসিন্দাদের বোঝানো হচ্ছে। পাশাপাশি, কালোবাজারি রুখতেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডিসিপি(পশ্চিম) বলেন, অতিরিক্ত দামে কোনও জিনিস বিক্রি করা যাবে না। ক্রেতাদের সুবিধার্থে সামগ্রীর মূল্য দোকানের বোর্ডে টাঙানোর নির্দেশ ব্যবসায়ীদের দেওয়া হয়েছে।