খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
ক্রিকেটে মশগুল সেসব কিশোরদের মুখে ছিল না কোনও মাস্ক। এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে দুই খুদে খেলোয়াড় কিশোর ও প্রীতম বলে, আমরা রোজদিন এরকম ফাঁকা রাস্তা পাই না। আমাদের কোনও খেলার মাঠ নেই। তাই আমরা এদিন খেলতে এসেছি। করোনা ভাইরাস নিয়ে অত ভয় নেই আমাদের।
অন্যদিকে, গোটা বালুরঘাট শহর শুনশান থাকলেও কিছু কিছু এলাকায় মানুষের জটলা দেখা গিয়েছে। আড্ডার ঠেকগুলিতে করোনা ভাইরাস নিয়ে বিস্তর চর্চা চলছেল। এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মৃদুল মণ্ডল বলেন, অনেকক্ষণ বাড়িতে ছিলাম। এখন একটু রাস্তায় বেরিয়েছি। এখানে গল্প করছি। তবে এখনই চলে যাব। এদিন দেখা যায়, বালুরঘাট শহরজুড়ে কিছু যুবক বাইকে চেপে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সেলফি তুলছেন, সেই সেলফি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন। চেনা শহরের অচেনা রূপ দেখতে ব্যস্ত সেসব যুবকদের মধ্যে কিন্তু করোনা ও জনতা কার্ফু নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাতে দেখা যায়নি। এরকমই এক যুবক তন্ময় রায় বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে ভয় নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু এরকম ফাঁকা শহর আগে কখনও দেখিনি। তাই একটু ছবি ও সেল্ফি তুলে রাখছি।
সবাই অবশ্য ঘুরতে বের হননি। কেউ কেউ বেরিয়েছেন পেটের তাগিদেও। আবার কেউ জরুরি কোনও কাজে বেরিয়ে সমস্যায় পড়েছেন পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায়। তনুশ্রী সরকার নামে এক মহিলা বলেন, আমার মা অসুস্থ রয়েছে। তাই সকাল বেলা ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। টোটোও পাইনি। তাই পায়ে হেঁটেই গিয়েছিলাম।
অন্যদিকে, বালুরঘাটের হেড পোস্ট অফিস চত্বরের বৃদ্ধ দোকানদার বিধূভূষণ পাল বলেন, এদিন কি কারণে সব দোকানপাট, বন্ধ জানি না। যদি সব বন্ধ থাকে, তাহলে আমার দোকানে তো কেউ আসবে না। এই দোকানে একদিনে যা রোজকার হয়, তা দিয়েও আমার ভালোমত খাওয়া জোটে না। বিক্রি না হলে তো আরও সমস্যা। মনি হালদার নামে এক মাছ বিক্রেতা বলেন, সারা রাত মাছ ধরি। সকালে মাছ বিক্রি করি। এই রোজগার দিয়েই আমার সংসার চলে। তাই করোনার ভয়কে উপেক্ষা করেই আজ দোকান খুলেছি। দু'একজন লোক অবশ্য মাছ নিয়ে যাচ্ছেন। রাস্তায় রাস্তায় বেশ কয়েকটি টোটো চালক এবং ঠেলা চালকে দেখা যায়। তাঁদের দাবি, একদিন রোজকার না করে থাকলে বাড়িতে সংসার চলে না। এমনই এক ঠেলাচালক সৈলেশ সাউ বলেন, মালিকের বাড়িতে মাল পৌঁছে দিয়ে টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরছি।
এদিন সকালে একজন মাত্র মহিলা যাত্রী নিয়ে একটি স্টেট বাস বেরিয়ে যায় বালুরঘাটের ডিপো ছেড়ে। মল্লিকা ওঁরাও নামের সেই মহিলা যাত্রী বলেন, আমি গঙ্গারামপুর হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী। তাই আমাকে ডিউটিতে যেতেই হবে।