পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
দোলযাত্রা উৎসবে বড় মদনমোহনকে মন্দির থেকে বের করে রাসমেলা মাঠে নিয়ে যাওয়া হবে। সেসঙ্গে রাজমাতা মন্দির, ডাঙ্গারআই মন্দিরের মদনমোহনরাও সেখানে আসবেন। ওদিকে বাণেশ্বর ও ষণ্ডেশ্বর মন্দির থেকেও বিগ্রহ নিয়ে আসা হবে। বাণেশ্বর ও ষণ্ডেশ্বর দোলযাত্রা উপলক্ষে মদনমোহন বাড়িতে একদিন থাকবেন। দোলযাত্রার জন্য মদনমোহন পঞ্চম দোল পর্যন্ত মন্দিরের বারান্দায় বসবেন। সেখানে ভক্তরা তাঁকে আবির দিতে পারবেন। এখানে মদনমোহনকে ভেষজ আবির দেওয়া হয়। এছাড়াও মদনমোহনের অধিবাস, বিশেষ পুজো, বাণেশ্বর ও ষণ্ডেশ্বর শিবের জন্য বিশেষ ভোগের আয়োজন করা হয়।
মদনমোহন মন্দিরের রাজ পুরোহিত হীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, রাসমেলা মাঠে দোলযাত্রার বাঁশ আরোপণের মধ্যে দোলযাত্রা উৎসবের সূচনা হয়েছে। অন্যান্য প্রস্তুতিও চলছে। এই প্রথা কোচবিহারের মহারাজাদের আমল থেকেই চলে আসছে।
কোচবিহারের মহকুমা শাসক সঞ্জয় পাল বলেন, চিরাচরিত প্রথা মেনে কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে দোলযাত্রার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
কোচবিহার মদনমোহন মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাসমেলা মাঠে হোলির বাঁশ আরোপণ করা হয়েছে। আগামী ৮ মার্চ দোল পূর্ণিমার আগের দিন বহ্নিৎসব হবে। বুড়িরঘর বা ভেড়ার ঘর নামেও এটি পরিচিত। এই উৎসবে স্বয়ং বড় মদনমোহন মন্দির থেকে বেরিয়ে রাসমেলা ময়দানে যাবেন। সেউপলক্ষে শোভাযাত্রা হবে। ওদিক থেকে রাজমাতা মন্দির ও ডাঙ্গরআই মন্দির থেকেও মদনমোহনরা আসবেন। সবাইকে ছনের ঘরের মধ্যে বসিয়ে পুজো করা হবে। পুজো শেষ হলে চৌদলায় মদনমোহনকে সাতপাক ঘোরানো হয়। এরপর মন্ত্রোচ্চারণের পর দুয়ারবক্সি ও রাজপুরোহিত বুড়ির ঘরে আগুন দেবেন। এরপর মদনমোহন মন্দিরে ফিরে আসবেন। রাজমাতা ও ডাঙ্গারআই মন্দিরের মদনমোহনরা ফিরে যাবেন।
মদনমোহন মন্দিরে ফিরে আসলে রাতে দোলের অধিবাস অনুষ্ঠিত হবে। গন্ধ তেল, ধূপধুনো দিয়ে এই অধিবাস হয়। পরের দিন অর্থাৎ ৯ মার্চ, সকালে মদনমোহনের বিশেষ পুজো হবে। ওই দিন থেকে পরপর পাঁচদিন অর্থাৎ পঞ্চম দোল পর্যন্ত মদনমোহন বারান্দায় অধিষ্ঠান করবেন। সেসময়ে ভেষজ আবির মদনমোহনের পায়ে দেওয়া যাবে। মন্দির কর্তৃপক্ষ এই ভেষজ আবিরের ব্যবস্থা করে। ১০ মার্চ দোল সোয়ারি অনুষ্ঠান হবে। সেদিন মদনমোহন রাসমেলা মাঠে যাবেন না। সেদিন রাজমাতা মন্দির, ডাঙ্গরআই মন্দির, বাণেশ্বর শিব, ষণ্ডেশ্বর শিব, মদনমোহন মন্দিরে থাকা দীনদয়াল, দীনগোবিন্দ সহ মদনমোহনের পাশের অন্যান্য দেবদেবীরাও সোয়ারি উৎসবে শামিল হবেন। ওই দিনই বাণেশ্বর ও ষণ্ডেশ্বর মন্দিরের শিবরা মদনমোহন মন্দিরে রাত্রিবাস করবেন। ১১ মার্চ এই উপলক্ষে বিশেষ ভোগ হবে। ভোগে পায়রা, খিচুরি, পায়েস, লুচি প্রভৃতির আয়োজন থাকে। ভোগ নিবেদন শেষে দুপুরে সকলে বিশ্রাম নেবেন। বিকেলে আবার বাণেশ্বর ও ষণ্ডেশ্বর নিজেদের মন্দিরে ফিরে যাবেন। এই যাওয়া আসার সময়ে বিশেষ পুলিসি প্রহরার ব্যবস্থাও থাকবে।