বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পুলিস সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্যের ভিত্তিতে লস্করপাড়ার ওই প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক পার্থ সরকারকে বাবা ও মা সহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই প্রতারণার ঘটনায় আর কেউ যুক্ত আছে কি না তা খুঁজে বের করতে ওই স্কুল শিক্ষক ও তাঁর বাবাকে সাতদিনের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মা রত্না সরকারকে আদালত জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত পার্থ সরকার কুমারগ্রামের রায়ডাক ফরেস্ট ভিলেজ প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। তাঁর বাবা আনন্দময় সরকার কুমারগ্রামের দলদলি বিএফপি প্রাথমিক স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। পার্থ সরকার গত দু’বছর ধরে নিম্নঅসম, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলায় কয়েকশো বেকার যুবক যুবতীর কাছে স্কুল সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নাম করে লাখ লাখ লাখ টাকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। চাকরি দেওয়ার নাম করে এভাবে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ওই স্কুল শিক্ষক ৭-১২ লাখ পর্যন্ত টাকা তুলেছিলেন। টাকা নেওয়ার পর অনেককে ভুয়ো নিয়োগপত্রও দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিতে যোগ দেওয়ার সময় চাকরি প্রার্থীরা বুঝতে পারেন টাকা দিয়ে তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। এরপরেই চাকুরি প্রার্থীরা তাঁদের টাকা ফেরতের দাবি জানালে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক নানাভাবে ভয় দেখানোর হুমকি দিতেন বলে অভিযোগ।
প্রতারিত এক চাকরি প্রার্থী গোপাল দত্ত বলেন, চাকরি পাওয়ার আশায় ধারদেনা করে ওই শিক্ষককে ন’লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। বাড়ি থেকেই টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন ওই শিক্ষক। পরে প্রতারিত হয়েছি বুঝতে পেরে টাকা ফেরত চাইলে টাকা না দিয়ে ওই শিক্ষক নানাভাবে হুমকি দেওয়া শুরু করেন। তাই প্রতারক ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে পুলিসের কাছে অভিযোগ করেছি।
আর এক চাকরি প্রার্থী লিটন সরকার বলেন, চাকরি পাওয়ার আশায় আমি জমি বেঁচে ওই শিক্ষককে সাড়ে সাতলক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু চাকরি পায়নি। বাধ্য হয়ে পুলিসের কাছে যেতে হয়েছে।
কুমারগ্রাম থানার আইসি বাসুদেব সরকার বলেন, চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রায় ১০ কোটি টাকা বাজার থেকে তোলার অভিযোগ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এসেছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকা আরও কয়েকজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক সুজিত সরকার বলেন, রায়ডাক ফরেস্ট ভিলেজ প্রাথমিক স্কুল শিক্ষককে গ্রেপ্তারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বারোবিশার বাসিন্দা জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূল কংগ্রেসের শীলা দাস সরকার বলেন, ধৃত ওই শিক্ষকের সঙ্গে বিজেপি নেতাদের মাখামাখি আছে। বিজেপির জেলা সম্পাদক মনোজ ওঁরাও অবশ্য বলেন, ধৃত ওই শিক্ষকের সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূল মিথ্যা কথা বলছে।