দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
মাসে একবার করে মালদহ কলেজের পড়ুয়াদের ওই অভিনব উদ্যোগের ফলে ওই প্রত্যন্ত এলাকার পিছিয়ে পড়া গ্রামের পরিবেশ এখন অনেকটাই বদলে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন খোদ বাসিন্দারাই। পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে গ্রামের ছোটদের। তারা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। পাশাপাশি গ্রামের কারও শরীর খারাপ হলে ঝাড়ফুঁক তুকতাকে ভরসা না করে কোনও হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে প্রয়োজনে রক্ত জোগাড় করে দিচ্ছে পড়ুয়ারাই।
খেড়িবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা শিবু সোরেন, রবিন হাঁসদারা বলেন, আগে এই গ্রাম পিছিয়ে ছিল। এখন সব দিক দিয়েই উন্নতি ঘটছে। ওই ছাত্রদের উদ্যোগে গ্রামে জলধার বসেছে। পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে মিলে তারাই নানা জায়গায় দরবার করে সেই ব্যবস্থা করেছে। মালদহ কলেজের পড়ুয়ারা মাসে একবার করে আসে। আমাদের অনেক কিছু শেখায় ও বোঝায়।আমাদের বলে, ছেলেমেয়েদের শাসন করবে। ভালো বুদ্ধি দেবে। মেয়েদের আঠারো বছর না হলে বিয়ে দেবে না। বাড়ির বাচ্চাদের ভালো করে পড়াশুনা করাবে। বাড়ি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখবে। আমরা তাদের কথা শুনে চলছি। গ্রামের পরিবেশ এখন আগের থেকে অনেকটাই বদলে গিয়েছে। এনিয়ে আমরা খুশি। তবে আমরা চাই কলেজের পড়ুয়ারা এসে মাসে একদিন হলেও আমাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা করাক। তাহলে আরও ভালো হবে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা কালাচাঁদ হাই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর পড়ুয়া মিলন সোরেন বলল, কলেজের দাদারা এসে বুঝিয়েছে যে বড় হতে গেলে পড়াশুনা করতে হবে। মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। তাই আমি এখন রোজ খেড়িবাড়ি গ্রাম থেকে পুরাতন মালদহ অবধি সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাই। খুব আনন্দ লাগছে পড়াশুনা করতে। আমি বড় হয়ে পুলিস হতে চাই।
মালদহ কলেজের অধ্যাপক তথা গ্রাম দত্তক নেওয়া কর্মসূচির আহ্বায়ক পীযুষকান্তি সাহা বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ওই গ্রাম দত্তক নেওয়া হয়েছে। জেলার পিছিয়ে পড়া গ্রামগুলির মধ্যে অন্যতম খেরিবাড়ি গ্রাম। ২০১৭সালে সার্ভে করে দেখেছিলাম, এই গ্রামে জলের সমস্যা, রাস্তার সমস্যা ও শিক্ষার অভাব ছিল। আমরা কলেজের পক্ষ থেকে এলাকায় জলাধারের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আরও কাজ বাকি রয়েছে। ধাপে ধাপে সব হবে। তখন গ্রামে তিনজন পড়াশুনা করত। এখন গ্রামে ৩৩ জনেরও বেশি পড়াশুনা করে। গ্রামবাসীদের স্বনির্ভর করার জন্য সেলাই মেশিন দিয়েছি। গ্রামবাসীদের দাবি অনুযায়ী কলেজের বেশ কিছু পড়ুয়াদের দিয়ে আমরা গ্রামের শিশুদের পড়ানোর ব্যবস্থাও করব যাতে তারা লক্ষ্যপূরণে এগিয়ে যেতে পারে।