পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এনিয়ে সংস্থা রায়গঞ্জের ডিভিশনাল ম্যানেজার সুবীর সাহা বলেন, একটা সময় সংস্থা অবহেলিত ছিল, এটা ঠিক। গত কয়েক বছরে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। সংস্থার আয়ও বেড়েছে।
বাম জমানার শেষের দিকে এসে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। বিভিন্ন লাভজনক গুরুত্বপূর্ণ রুট থেকে বাস তুলে নেওয়া, লজঝড়ে বাসে ঝুঁকির যাত্রা, মাঝপথে গাড়ি বিকল হয়ে দুর্ভোগ, কর্মী অফিসারদের মাসের পর মাস বেতন বকেয়া পড়ে থাকা, অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন না মেলা এসব নানান সমস্যায় জর্জরিত ছিল সংস্থা। এসবের অন্যতম কারণ হিসাবে সংস্থার ভুল পরিকল্পনা, অদক্ষ পরিচালন ব্যবস্থা, সীমাহীন দুর্নীতি, বঞ্চিত কর্মীদের গয়ংগচ্ছ মনোভাব এসব উঠে এসেছিল। একপ্রকার মৃতপ্রায় হয়ে ওঠে সংস্থা। অথচ একটা সময় এটাই ছিল উত্তরবঙ্গের মানুষের সড়ক যোগাযোগের প্রথম পছন্দ। এর বেহাল দশায় কর্মীরা যেমন হা-হুতাশ করতে থাকেন তেমনি সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ তৈরি হয়।
২০১১ সালে রাজ্যে ঐতিহাসিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে অন্যান্য নানা বিষয়ে উন্নতির পাশাপাশি ঘুরে দাঁড়ায় উত্তরবঙ্গের মানুষের প্রিয় এনবিএসটিসি। নতুন সরকারের আমলে শুধুমাত্র রায়গঞ্জ ডিভিশনেই নতুন প্রায় ১০০টি গাড়ি নেমেছে। এরমধ্যে ভিডিও কোচও রয়েছে। চাকুলিয়া, চাঁচল, ডায়মন্ডহারবার, বারাসত, রায়গঞ্জ-কলকাতা ভায়া কালিয়াগঞ্জ, বুনিয়াদপুর সহ প্রায় ১০টি নতুন রুট খোলা হয়েছে। এতে পরিষেবার মান যেমন বেড়েছে তেমনি সংস্থার আয়ও বেড়েছে। বর্তমানে শুধু রায়গঞ্জ ডিভিশনই মাসে গড়ে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আয় করছে। ১০ বছর আগে এই আয় ছিল প্রায় অর্ধেক।
শুধু নতুন গাড়ি কেনা নয়, পুরনো, অচল গাড়ি যা বিভিন্ন ডিপোয় স্তূপাকার হয়েছিল, সেগুলি নিলাম করে বিক্রি করে দেওয়া হয়। রায়গঞ্জ ডিভিশন থেকে এরকম প্রায় ৬০টি গাড়ি নিলাম করা হয়েছে। প্রায় ২০০ কর্মীকে ভিআরএস দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তে সংস্থা থেকে ও বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে চুক্তির ভিত্তিতে সাড়ে চারশোরও বেশি কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। জ্বালানি সাশ্রয় ও সংস্থার আয় বাড়ানোর জন্য কর্মীদের নিয়ে নিয়মিত কর্মশালা হচ্ছে। বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনার জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। মাস পয়লা বেতন পেয়ে কর্মীরাও অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। সংস্থার আধুনিকীকরণে ইলেকট্রনিক টিকিট ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত এনবিএসটিস ড্রাইভার অ্যান্ড তৃণমূল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল সেক্রেটারি কৌশিক দে বলেন, সংস্থা যে এভাবে ঘুরে দাঁড়াবে তা ভাবাই যায় না। তৃণমূল সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রম আমাদের প্রিয় এই সংস্থাকে আজকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে। কর্মসংস্কৃতির হাল ফিরেছে। কর্মীরা মাস পয়লা বেতন পাচ্ছেন। আমাদের কর্মীদের কিছু দাবি অবশ্যই আছে। সেগুলি সরকার পূরণ করবে বলেই আমরা আশাবাদী। আইএনটিইউসি অনুমোদিত এনবিএসটিসি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রণব বসাক বলেন, সংস্থা চকচকে হয়েছে সন্দেহ নেই, কিন্তু কর্মীদের উন্নতি হয়নি। স্থায়ী কর্মীদের এখনও বকেয়া পড়ে আছে। ৯০ শতাংশ অস্থায়ী কর্মীর ভবিষ্যৎ কী কেউ জানে না। আমরা এদের স্থায়ীকরণ দাবি করেছি।