বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
জেলা কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে , এবছর জেলার ১ লক্ষ ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। জেলায় ধান উৎপাদন হয়েছে প্রায় নয় লক্ষ মেট্রিক টন। জেলা খাদ্যদপ্তর কৃষকদের থেকে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে এক লক্ষ মেট্রিক টন। অঙ্কের হিসেবেই স্পষ্ট যে জেলায় উৎপাদিত বিপুল পরিমান ধান কিনতেই পারবে না খাদ্যদপ্তর। সেই লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ৬১ হাজার মেট্রিক টন ধান ইতিমধ্যেই কেনা সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কৃষিদপ্তরের আধিকারিক জোতির্ময় বিশ্বাস বলেন, এবারে আমাদের জেলায় খুব ভালো ধান উৎপাদন হয়েছে। প্রায় নয় লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। আমরা খবর পাচ্ছি যে ব্লকজুড়ে কৃষকরা খাদ্যদপ্তরের কাছে ধান দেওয়ার পরেও বাইরে, ফড়েদের কাছে ধান বিক্রি করছেন। চোদ্দোশো টাকা কুইন্টাল দরে খোলা বাজারে ধান বিক্রি করা হচ্ছে। খাদ্যদপ্তর ধান নিচ্ছে। তাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সে বিষয়ে আমরা কোনও মন্তব্য করব না।
জেলা খাদ্য নিয়ামক জয়ন্ত রায় বলেন, এবারে আমাদের জেলায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হয়েছে এক লক্ষ মেট্রিক টন। তার মধ্যে আমরা জেলার আটটি ব্লক থেকে ৬১ হাজার মেট্রিক টন ধান ইতিমধ্যেই কিনে ফেলেছি। রাজ্য খাদ্যদপ্তর থেকে যেমন নির্দেশ আসছে, আমরা সেভাবে কৃষকদের থেকে ধান কিনছি।
বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির সংসদ সদস্য সুকান্ত মজুমদার বলেন, আমাদের জেলায় ধান কেনা নিয়ে প্রহসন হচ্ছে। আদতে কৃষকেরা ধান বিক্রি করতে পারছেন না। কিষাণমান্ডিতে ধান বিক্রি করতে গিয়ে কৃষক বন্ধুর গেরোয় পড়তে হচ্ছে জেলার ক্ষুদ্র কৃষকদের। এছাড়াও গ্রামীণ এলাকায় শিবির করে ধান না কেনায় জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষকেরা ধান বিক্রি করতে পারছেন না। ধান কেনা নিয়ে কিষাণ মান্ডিতে ফড়েরাজ চলছে। আদতে কৃষকদের কোনও লাভই হচ্ছে না।
সিপিআইএম জেলা কমিটির সদস্য অচিন্ত্য চক্রবর্তী বলেন, জেলায় সরকারিভাবে ধান কেনায় প্রকৃত কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন না। একদল ফড়েরা সুবিধা পাচ্ছে। কৃষিকদের কাছ থেকে ধান নিয়ে তারা কৃষক বাজারে বিক্রি করছে। জেলায় ধান কেনার জন্য খাদ্যদপ্তরের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা খুবই সামান্য। আমাদের জেলায় তার থেকে অনেক গুণ বেশি ধান উৎপাদন হয়েছে। জেলায় গ্রামে গ্রামে ধান কেনার কোনও শিবির নেই। খুব দ্রুত আমরা কৃষকদের স্বার্থে পথে নেমে আন্দোলন করব।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কৃষকদের ভরসা এখন গ্রামের ফড়েরাই। সরকার নির্ধারিত মূল্যের অনেক কম টাকায় ফড়েদের কাছে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। খাদ্যদপ্তর ধান কিনলেও তা মোট উৎপাদনের অপেক্ষায় অনেক কম।