পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
জেলা শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর দিনাজপুরে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ৮৩৮ জন। এর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ১২ হাজার ২০২ জন ও ছাত্রী সংখ্যা ২১ হাজার ৬৩৬ জন। জেলায় ছাত্রী সংখ্যার প্রায় অর্ধেক ছাত্র এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। ইসলামপুর মহকুমায় এই পার্থক্যটা আরও স্পষ্ট। ইসলামপুরে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ হাজার ৯৫১ জন। এর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ৬ হাজার ২৬২ জন ও ছাত্রী সংখ্যা ১২ হাজার ৬৮৯ জন। কার্যত ছাত্রের সংখ্যা মোট পরীক্ষার্থীর তিন ভাগের এক ভাগ মাত্র।
গত বছর জেলায় মোট মাধ্যমিক পরিক্ষার্থীর সংখ্য ৩৯ হাজার ৩১ জন। এর মধ্যে ২৪ হাজার ৭৮ জন ছাত্রী ও ১৪ হাজার ৩১ জন ছাত্র ছিল। গত বছরও ছাত্রীদের তুলনায় ছাত্রের সংখ্যা অনেক কম ছিল। আরও একটি বিষয় লক্ষ্যণীয়। তা হলো, গত বছরের তুলনায় এবার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে।
নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক বিপুল মৈত্র বলেন, আমাদের জেলায় বহু ছেলেই পড়াশুনো বাদ দিয়ে ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজে চলে যায়। তাই মাধ্যমিকে ছাত্র পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম। এদিকে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সংখ্যায় মেয়েরা এগিয়ে থাকাকে রাজ্য সরকারের সাফল্য বলেই মনে করছেন উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধক্ষ শিবানি সিংহ। তিনি বলেন, মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্প সাফল্য পেয়েছে। যার ফলে সমস্ত মেয়েরাই স্কুলে যাচ্ছে। কিন্তু অনেক অভাবি পরিবারের ছেলেরা অল্প বয়সে ভিন রাজ্যে কাজ করতে চলে যাচ্ছে। অনেক অভিভাবকই কমবয়স থেকেই নিজের ছেলেদের ভিনরাজ্যে কাজে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তাই মাধ্যমিকে ছাত্র সংখ্যা কম।
তৃণমূল শিক্ষক নেতা তথা মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের উত্তর দিনাজপুর জেলা পর্যবেক্ষক ব্যোমকেশ বর্মন বলেন, গ্রামাঞ্চলে অনেক পরিবারের ছেলেরাই পরিবারের জন্য দু’পয়সা বাড়তি উপার্জন করতে অন্য রাজ্যে কাজ করতে চলে যায়। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে শিক্ষকদের আরও বেশি পরিশ্রম করতে হবে। শিক্ষার গুরুত্ব অভিভাবকদের বোঝাতে হবে। কন্যশ্রী প্রকল্পের সাফল্যের কারণে প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়েরাও স্কুলে যাচ্ছে। সে কারণে ছাত্রী সংখ্য বেশি। তবে আমরা আশাবাদী যে কন্যাশ্রী মেয়েরা একদিন মা হবে, তাদের গুনেই একদিন তাদের ছেলেরাও শিক্ষিত হবে।
ইসলামপুরের সহকারী শ্রম কমিশনার শেখ নওশাদ আলি বলেন, শিশু শ্রম আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। আমরা বিভিন্ন এলাকায় এব্যাপারে প্রচারও করে থাকি। তবে ভিনরাজ্যে আমাদের জেলার কতজন স্কুলছুট কিংবা কিশোর শ্রমিক আছে, এই পরিসংখ্যান আমাদের দপ্তরে নেই।
স্থানীয়রা বলছেন, উত্তর দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় হোটেল, রেস্টুরেন্ট, গ্যারেজ, চায়ের দোকান সহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বহু শিশু শ্রমিক আছে। প্রশাসন দুই একবার শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও সেই অভ্যাস বন্ধ হয়নি। গ্রামাঞ্চলের অনেক কিশোর ভিন রাজ্যে বিভিন্ন ককারখানায় শ্রমিকের কাজ করে। এর ফলে ছাত্রদের অনুপাতে ছাত্র সংখ্যা মাধ্যমিকে দিন দিন কমছে।