বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
দীর্ঘদিন ধরে আবগারি দপ্তরের কাছে বিভিন্ন সূত্র মারফত এই ধরনের খবর এসে পৌঁছলেও ঠিক জায়গায় হানা দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। তবে সম্প্রতি ডালখোলা এবং হেমতাবাদের দুটি জায়গায় বড়োসড়ো অভিযান চালানোর পর ভিন রাজ্য থেকে উত্তর দিনাজপুর জেলার মাধ্যমে বিহারে মদ পাচার করার চক্রটির সন্ধান পান আবগারি দপ্তরের আধিকারিকরা। বিপুল পরিমাণে মদ ওই সব রাজ্য থেকে এই জেলা হয়ে বিহারে ঢুকছে বলে জানা গিয়েছে।
এবিষয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার আবগারি দপ্তরের সুপারিনটেনডেন্ট তাপসকুমার মাইতি বলেন, আমরা বেশ কয়েকটি জায়গায় সম্প্রতি অভিযান চালিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমরা হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ থেকে আসা কিছু মদের বোতল দেখতে পাই। সেগুলিকে কিন্তু ভেজাল মদ বলা যাচ্ছে না। সেসব রাজ্য থেকে মদ কিভাবে এখানে এলো, সে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এছাড়া আরও একটি জাল মদ তৈরি করার কারখানায় গিয়ে আমরা দেখতে পাই, কিভাবে ভিন রাজ্যে বিক্রি করার জন্য ওই মদগুলি এখানে বানানো হচ্ছে। হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, অরুণাচলের বিভিন্ন মদের নাম লেখা বেশ কিছু লেবেল সেখানে রাখা ছিল। তা থেকে আমাদের অনুমান যে জাতীয় সড়ককে ব্যবহার করে বিভিন্ন উপায়ে ভিনরাজ্য থেকে মদ নিয়ে এসে তা বিহার বা অন্য কোনও জায়গায় পাচার করা হচ্ছে। আমরা এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছি। এর পেছনে যেসব চক্র রয়েছে, তাদের ধরতে আমরা তৎপর।
সম্প্রতি উত্তর দিনাজপুর জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় আবগারি দপ্তর অভিযান চালায়। হেমতাবাদ, ডালখোলা সহ জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় এই অভিযানের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ মদ তৈরীর সামগ্রী উদ্ধার করতে সক্ষম হন আবগারি দপ্তরের আধিকারিকরা। সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে পাওয়া যায় যে অবৈধভাবে মদ বিক্রি চক্রের সঙ্গে বিহার ও ঝড়খণ্ডের বেশ কিছু দুষ্কৃতী জড়িত রয়েছে। হেমতাবাদের বাঙালবাড়ি এলাকা থেকে প্রায় ৫১৪৯ লিটার মদ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিলেন আবগারি আধিকারিকরা। গ্রেপ্তার হয়েছিল একজন। বিহারের মধুবনী এলাকার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি পেশায় নিজেকে শ্রমিক বলে পরিচয় দিলেও আদতে তার আসল পরিচয় কি, তা জানতে এখনও লাগাতার চেষ্টা চালাচ্ছেন আবগারি দপ্তরের গোয়েন্দারা। হেমতাবাদের যে গোডাউন থেকে ওই বিপুল পরিমাণ মদ মিলেছিল, তা কে ভাড়া নিয়েছিল তা জানতেও তদন্ত শুরু করেছে আবগারি দপ্তর। একইভাবে ডালখোলায় একটি ভেজাল মদ তৈরি করার কারখানা হানা দিয়ে প্রায় ৯২৭ লিটার মদ উদ্ধার করে আবগারি দপ্তর। এছাড়াও মদ তৈরির বিভিন্ন সামগ্রীও তারা বাজেয়াপ্ত করেছিল।
এই অভিযানগুলিতে যে বিষয়টির মিল রয়েছে,তা হলো, হরিয়ানা বা উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যের সঙ্গে এই অবৈধ মদের কারবারের একটা যোগসূত্র রয়েছে। আবগারি দপ্তরের তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, এই মদ উত্তর দিনাজপুর জেলায় বিক্রি হচ্ছে না। তাঁরা দাবি করছেন, মূলত পার্শ্ববর্তী রাজ্যে মদ বিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে এভাবেই বাইরে থেকে সেখানে মদ নিয়ে আসা হচ্ছে। উত্তর দিনাজপুর জেলার জাতীয় সড়কে ব্যবহার করেই মদ সরবরাহ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।