বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এক অভিভাবক সুমিত সাহা বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। আগামী বছর ওদের পরীক্ষা। মাঝপথে স্কুলের শিক্ষকরা টিউশনি বন্ধ করে দেওয়ায় এখন আমরা বিপাকে পড়েছি। শিক্ষকরা আমাদের জানিয়েছেন, বিদ্যালয় পরিদর্শকের দপ্তর থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে তাঁরা আর টিউশনি পড়াতে পারবেন না। তাই তাঁরা আচমকাই পড়ানো বন্ধ করে দেন। শিক্ষকরা এভাবে পড়ানো বন্ধ করায় আমরা বিপাকে পড়েছি। আমরা বিভিন্ন সময়ে ব্লক ও জেলার শিক্ষাদপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তাঁরা আমাদের নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। বাধ্য হয়ে পথে নামতে হল।
জলপাইগুড়ির জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রাণতোষ মাইতি বলেন, স্কুল শিক্ষকরা প্রাইভেট টিউশনি পড়াতে পারবেন না। বিকাশ ভবন থেকে এমনই নির্দেশ এসেছে। সেটা আমরা সব স্কুলের শিক্ষকদের জানিয়ে দিয়েছি। নতুন নির্দেশিকা না আসা পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। তাই কোনও স্কুল শিক্ষক যাতে প্রাইভেট টিউশনি না পড়ান তার আবেদন আমরা জানিয়েছি। সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করলে আইন মেনে পদক্ষেপ করা হবে।
ময়নাগুড়ির বিডিও ফিন্টোশ শেরপা বলেন, শনিবার আমরা ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের নিয়ে এনিয়ে মিটিং করব। সেখানে বিভিন্ন দপ্তরের অফিসাররা থাকবেন। আশা করি, সমস্যার সমাধানের উপায় বের হবে।
বিজেপির শিক্ষা সেলের জলপাইগুড়ি জেলার সহ আহ্বায়ক রতন রায় বলেন, স্কুল শিক্ষকরা প্রাইভেট টিউশনি পড়াতে পারবেন না, এমন নির্দেশিকা স্কুলে পৌঁছেছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ময়নাগুড়িতে এদিন পড়ুয়ারা স্কুল ইউনিফর্ম পরে রাস্তা অবরোধ করেছে, এটা ওরা ঠিক করেনি। আমার মনে হয়, কিছু শিক্ষক তাদের পথে নামতে ইন্ধন দিচ্ছে।
এদিন ময়নাগুড়ির নন্দনকানন ময়দানে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা জমায়েত করে। তারা সকলেই স্কুলের ইউনিফর্ম পরে ছিল। তাদের সঙ্গে কয়েকজন অভিভাবকও ছিলেন। নন্দনকানন ময়দান থেকে ১০টা নাগাদ পড়ুয়ারা মিছিল বের করে। ছাত্রছাত্রীরা স্কুল শিক্ষকদের গৃহশিক্ষকতা করতে দেওয়ার দাবিতে হাতে প্ল্যাকার্ড নেয়। ওই প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, আমরা পড়তে চাই, আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছেলেখেলা চলবে না। বিশাল মিছিলটি ময়নাগুড়ি ট্রাফিক মোড়ে এসে পথ অবরোধ করে। পরে ওই অবরোধে অভিভাবকরাও শামিল হন। যানবাহন চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। রাস্তা অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসে ময়নাগুড়ি থানার পুলিস। তারা অবরোধকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। পরে ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূল কংগ্রেসের সজলকুমার বিশ্বাস, ময়নাগুড়ির বিডিও ফিন্টোশ শেরপা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁরা সকলকে বুঝিয়ে ১২টা নাগাদ অবরোধ তুলে দেন। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে দুপুর ১টা বেজে যায়।