বিএনএ রায়গঞ্জ: উত্তর দিনাজপুরে চিকিৎসা করাতে এসে বাংলাদেশের এক বাসিন্দার মৃত্যুতে বিপাকে পড়েছেন তাঁর আত্মীয়স্বজনরা। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম এরশাদ আলি(৬৩)। মৃতের বাড়ি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙি থানার বামুনিয়া গ্রামে। দেশে মৃতদেহ ফিরিয়ে নিয়ে যেতে সমস্যা হওয়ায় পরিজনদের অনুমতি নিয়ে শেষ পর্যন্ত এদেশেই ওই ব্যক্তির শেষকৃত্যের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি থানা এলাকার আলতাপুর গ্রামে ওই ব্যক্তির কয়েকজন আত্মীয় বসবাস করেন। মৃতের আত্মীয়রা বলেন, গত ১২ জানুয়ারি হিলি সীমান্ত দিয়ে এপারে আসেন এরশাদ আলি। পেশায় চাষি বাংলাদেশের ওই বাসিন্দা প্রায় দেড় বছর ধরে নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি তিনি পাসপোর্ট ভিসা করে চিকিৎসার জন্য এপারে চলে আসেন। মৃতের ভাই আলতাপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝিনাইকুরাগ্রামের বাসিন্দা সাহেব আলি বলেন, এরশাদ গত ১২ জানুয়ারি অসুস্থতা নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে চিকিৎসা করাতে আমাদের বাড়িতে আসে। তাকে বিহারের কিষনগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে কয়েকদিন ধরে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু চিকিৎসায় খুব একটা সাড়া পাওয়া যায়নি। কি হয়েছে সেটাও সঠিক জানা যায়নি। ওখানকার চিকিৎসকরা দক্ষিণ ভারতের নামি কোনও হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু দক্ষিণ ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করানোর মতো আর্থিক ক্ষমতা আমাদের ছিল না। কদিন ধরে খুব অসুস্থ ছিল। তার হাত, পা ফুলে যাচ্ছিল। বাংলাদেশে থাকার সময় দীর্ঘদিন সে অসুস্থ ছিল। সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু অসুস্থতা কাটিয়ে উঠতে পারছিলেন না। কিষানগঞ্জের চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর কয়েকদিনের মধ্যে ফের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার বিকেলে ভাই খুবই অসুস্থ বোধ করতে শুরু করে। সোমবার বিকেলেই রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাকে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকরা দেখেই তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সাহেব আলি বলেন, সোমবার বিকেলেই হাসপাতাল থেকে মৃতের ছেলে নুরুল ইসলামকে বাংলাদেশে ফোনে মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। তারা এদেশে আসার জন্য এদিক সেদিক ছোটাছুটি করেছেন। কিন্তু এদেশে আসতে চাইলেও দ্রুত বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা পাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। মৃতদেহ বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক রকমের সমস্যার কথা ভেবে মৃতের ছেলেমেয়েরা ভারতের মাটিতেই এরশাদ আলির শেষকৃত্য সম্পন্ন করার অনুমতি দিয়েছেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের ধারণা, বাংলাদেশি ওই নাগরিক বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন।