গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
আন্দোলনের ধার যে তাঁরা আরও বাড়াবেন তা এদিন জানিয়েছেন সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট নেতৃত্ব। সংগঠনের সম্পাদক শুভায়ু দাস এদিন নতুন করে আন্দোলনের পথে যেতে তাঁদের বাধ্য করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ১৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে আমাদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। ফলে দীর্ঘ একমাস ধরে চলতে থাকা কর্মবিরতি আমরা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলাম। কিন্তু ২৪ জানুয়ারির এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকের পর আমরা ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছি। মনে হচ্ছে কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে প্রতারণার রাস্তায় হাঁটছেন। তাই আন্দোলনের রাস্তায় ফিরে না গিয়ে আমাদের কোনও উপায় ছিল না।
সপ্তাহের শুরুতেই এই আন্দোলন শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক আধিকারিক থেকে শিক্ষক, শিক্ষিকা এমনকি পড়ুয়ারাও। তাঁদের বক্তব্য, এর আগে মাস খানেক ধরে আন্দোলন চলেছিল। ফলে যথেষ্টই সমস্যা হয়েছিল। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব স্তরের কর্মীদের বেতন পেতেও চরম সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। পড়ুয়াদেরও বিভিন্ন কাজকর্ম করতে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। আবার আন্দোলনের জেরে সেই সমস্যারই পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
তবে শিক্ষাকর্মীদের দাবি, এই আন্দোলনের বিষয়টি সম্পর্কে তাঁদের রাজ্য নেতৃত্ব অবহিত। রাজ্য নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরেই তাঁরা নতুন করে আন্দোলনে নেমেছেন।
শুভায়ুবাবু বলেন, এর আগেও আন্দোলনের সময় পড়ুয়াদের জরুরী পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা হেল্প ডেস্ক চালু করেছিলাম। এবারও প্রয়োজনে আমরা পড়ুয়া থেকে আধিকারিক কিংবা শিক্ষক শিক্ষিকা সকলকেই সব রকম সাহায্য করব। তবে নিজেদের পেশাগত ও প্রাপ্য দাবিদাওয়া আদায়ের আন্দোলন থেকে পিছিয়ে আসার কোনও প্রশ্নই নেই।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষাকর্মীরা দাবি করেছেন, রোপা ২০১৯ চালু হওয়ায় অন্যান্যদের বেতন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পুরানো বেতনক্রমে তাঁদের পক্ষে কাজ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। ন্যূনতম বেতন বৃদ্ধি না হলে তাঁদের ভাতে মরতে হবে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মীরা।
এদিন তাঁরা প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মিছিল করেন। পরে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে যান উন্নয়ন আধিকারিক রাজীব পতিতুণ্ডির অফিসে। কিন্তু তাঁর এই বিষয়ে কথা বলার বা আলোচনার এক্তিয়ার নেই জেনে ক্ষুব্ধ শিক্ষাকর্মীরা সেখানেই বসে পড়েন। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি ছিলেন না। তাঁর অবর্তমানে দায়িত্বে ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিতেন্দ্র সাহু। তাঁর সঙ্গেই এদিন আলোচনা করেন শিক্ষাকর্মীরা। আলোচনায় হাজির ছিলেন অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাদেক আলিও। তাঁরা দু’জনেই বিপ্লববাবুর সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালান বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি।
এদিন বিষয়টি নিয়ে জানার জন্য অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ ছিল। মোবাইল বন্ধ ছিল জিতেন্দ্রপ্রসাদ সাহুরও।
তবে সাদেক আলি বলেন, আমরা শিক্ষাকর্মীদের বক্তব্য শুনেছি। কর্তৃপক্ষের কাছে তা পৌঁছে দেওয়ারো চেষ্টা করেছি। ১৮ ডিসেম্বর ২২তম এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে বলা হয়েছিল শিক্ষাকর্মীদের বেতন বৃদ্ধির দাবিটি বিবেচনা করা হবে। কিন্তু ২৪ জানুয়ারির এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে দেখা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান আর্থিক অবস্থায় ওই দাবি পুরোপুরি মেটাতে পারছে না। অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কর্মীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান সূত্র খুঁজে পাওয়ার চেষ্টার কথা তাঁকে জানিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন সাদেক সাহেব।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাডহক কন্ট্রাকচুয়াল কর্মীদের গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি এই দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। কারা যোগ্যতা অনুযায়ী কোন শ্রেণীতে পড়বেন বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাও বিবেচ্য বলে জানিছেন কর্তৃপক্ষ।