বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতে সরকারি ১০০ দিনের কাজ সহ বিভিন্ন প্রকল্পের প্রায় আড়াই কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় ক’মাস আগে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করে ব্লক প্রশাসন। রায়গঞ্জের বিডিও রাজু লামা বলেন, সরকারি অর্থ তছরূপের জন্য পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে আমি এফআইআর করেছি। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতের উন্নয়ন ও কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখতে পদ্ধতি মেনে উপপ্রধান ওই দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। আইনি জটিলতায় সেটা আটকে রয়েছে। তবে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতে সরকারি প্রকল্পের উন্নয়নের টাকা তছরূপের অভিযোগ ওঠায় প্রায় বছরখানেক ধরে পঞ্চায়েতে অচলাবস্থা তৈরি হয়। গত কয়েক মাস ধরে এলাকায় সরকারি অর্থ তছরূপের বিরুদ্ধে বাসিন্দারা ধারাবাহিক আন্দোলন সংগঠিত করেছেন। আন্দোলনকারীদের চাপে প্রশাসন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের ঘটনার তদন্তে নেমে অনিয়মের বিষয়টি ধরেও ফেলেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত প্রধান লায়লা খাতুনের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে ব্লক প্রশাসন এফআইআর দায়ের হয়। শাসকদল ওই পঞ্চায়েত প্রধানের পাশে দাঁড়ায়নি। জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব পঞ্চায়েত প্রধানকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে।
এদিনের আন্দোলনকারীদের পক্ষে পসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রায় এক বছর ধরে বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতে সরকারি কোনও প্রকল্পের কাজ হচ্ছে না। বাসিন্দারা নাগরিক পরিষেবা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত হয়ে রয়েছেন। পাশাপাশি সামাজিক সহায়তা প্রকল্পের সুবিধা থেকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ থেকেও গ্রামের অসহায় মানুষরা বঞ্চিত হচ্ছেন। উন্নয়নের কোটি কোটি টাকা ফেরত চলে যাচ্ছে। বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতে অধিকাংশ গরীব মানুষের বসবাস। অসহায় মানুষরা ১০০ দিনের কাজ পাচ্ছেন না। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব থেকে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ শ্রমিকের কাজ ফেলে ঘরে ফিরছেন। অথচ ওই অসহায় মানুষগুলো গ্রামে ফিরে ১০০ দিনের কাজটুকুও পাচ্ছেন না। আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বিন্দোলে ভয়ঙ্কর একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখানে পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা, কেউ পঞ্চায়েত অফিসে আসছেন না। দেখা মিলছে না সরকারি কোনও কর্মচারীরও। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা আর্থিক চরম দুরবস্থা থেকে অতীতে নিজেদের কিডনি বিক্রি করে সংসার চালিয়ে সংবাদের শিরোণামে এসেছেন। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ন্যূনতম পরিষেবা না পেলে অসহায় বাসিন্দারা আবার কিডনি বিক্রির পথে হাঁটতে পারেন বলেও মনে করা হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েক হাজার বাসিন্দা ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। প্রায় ২০০০ জন বাসিন্দা গত কয়েক মাসে ভিনরাজ্য থেকে শ্রমিকের কাজ ছেড়ে ঘরে ফিরেছেন। ওই মানুষরা ঘরে ফিরেও কাজ পাচ্ছেন না। গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ রয়েছে।
পঞ্চায়েতের প্রধান লায়লা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যে অভিযোগ এনে ফাঁসানো হয়েছে। আইনি জটিলতায় উন্নয়নের কাজ বন্ধ থাকলেও জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন সার্টিফিকেট দিচ্ছি বাসিন্দাদের।