বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এক রাত রায়গঞ্জে থেকে হোটেলে খেয়ে পরদিন প্রতিমা নিয়ে তাঁরা পাড়ি দিচ্ছেন নিজেদের এলাকায়। আবার কেউ কেউ ভোর রাতে ট্রেন ধরে রায়গঞ্জ স্টেশনে পৌঁছে বিকেলের ট্রেনেই ফিরে যাচ্ছেন বিহারে। বিকেলের ট্রেনগুলিতে ভিড়ে তিলধারণের জায়গা থাকছে না। গত প্রায় তিনদিন ধরে শহরের পালপাড়া এলাকাতেও ভিড় কমার কোনও লক্ষ্মণই দেখা যাচ্ছে না। যদিও এই ভিড়ে যারপরনাই খুশি প্রতিমা শিল্পীরা। তবে তাঁদের দাবি, এই ভিড় নতুন নয়। প্রত্যেকবারই সরস্বতী পুজোর সময়ে বিহারের পুজো উদ্যোক্তারা আসেন রায়গঞ্জে। এখানকার প্রতিমা নিয়ে তাঁরা নিজ নিজ এলাকার মণ্ডপ সাজান। মৃৎশিল্পীরা দাবি করেন, বিহারের পুজো উদ্যোক্তারা অনেক ভালো মানের প্রতিমা অনেক কম খরচে পান বলেই তাঁরা রায়গঞ্জে আসেন।
এবিষয়ে রায়গঞ্জের পালপাড়ার প্রতিমাশিল্পী ভানু পাল বলেন, আমরা প্রতিবছরই সরস্বতী পুজোর সময়ে বিহারের পুজো উদ্যোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী মূর্তি তৈরী করে থাকি। কম করে কয়েকশো মূর্তি আমাদের এলাকা থেকে বিহারের বিভিন্ন প্রান্তে যায়। সেখানকার উদ্যোক্তারা দাবি করেছেন, এখানে যে মূর্তি পাওয়া যায় তা বিহারের মৃৎশিল্পীদের হাতে তৈরি প্রতিমার থেকে অনেক সস্তা এবং সুন্দর হয়।
বিহার থেকে রায়গঞ্জে আসা এক পুজো উদ্যোক্তা রাম পাসওয়ান বলেন, গত রবিবার বিকেলে আমরা রায়গঞ্জে পৌঁছে মূর্তি পছন্দ করি। তবে পরবর্তী ট্রেন ধরার সময় আর আমাদের হাতে ছিল না। তাই রবিবার হোটেলে রাত্রিযাপন করে খাওয়া-দাওয়া করে, সোমবার সকালে মূর্তি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। এখানকার প্রতিমা অনেক সুন্দর। প্রতিবারই আমরা এখানে আসি প্রতিমা কিনতে।
আরও এক উদ্যোক্তা কিষন সিং বলেন, প্রতিবারই আমরা রায়গঞ্জ শহরে এসে একদিন থেকে মূর্তি নিয়ে বাড়ি যাই। থাকা খাওয়ার খরচ হওয়ার পরেও যে দামে যত সুন্দর মূর্তি আমরা এখানে পাই, তা আমাদের জায়গায় অমিল। এই কারণেই আমরা এখানে এসে একদিন থেকে প্রতিমা নিয়ে ঘরে ফিরি।
রায়গঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন একটি লজের ম্যানেজার অমিত ঘোষ বলেন প্রতি বছরই এই সময়ে আমাদের লজে বিহারের কিছু পুজোর উদ্যোক্তারা আসেন, থাকেন এবং পরদিন মূর্তি নিয়ে বাড়ি ফেরেন। এবারেও কমবেশি গ্রাহক এসেছেন।
রায়গঞ্জ শহর বিহার রাজ্যের পার্শ্ববর্তী হওয়ার কারণেই বিহারের বেশ কিছু এলাকা পুজো উদ্যোক্তারা রায়গঞ্জ শহরে প্রতিমা নিতে আসেন। প্রতিবছরই দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো থেকে শুরু করে বিভিন্ন ঠাকুরের প্রতিমানিয়ে যাওয়ার চল আছে। তবে সরস্বতী পুজো উপলক্ষে আগত উদ্যোক্তাদের সংখ্যা প্রতিবছরই বেড়ে চলেছে। এই কারণে বছর বছর সরস্বতী পুজোর আগে বিহারের বেশকিছু এলাকার বাসিন্দাদের রায়গঞ্জ শহরে আসতে দেখা যায়। ট্রেনে করে রায়গঞ্জের পালপাড়ার মূর্তি নিয়ে তাঁরা পাড়ি দেন বিহারের কাটিহার, বারসই এলাকার পুজো মণ্ডপগুলিতে।