কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
উত্তর নাজপুর জেলার বাণিজ্য কেন্দ্র বলে পরিচিত ডালখোলার কলেজ মোড়ে সিএএ সমর্থনে বিজেপির অভিনন্দন যাত্রার প্রস্তুতি অনেক দিন আগে থেকেই নিচ্ছিল বিজেপি। দলের এই কর্মসূচির জন্য পুলিসের অনুমতি ছিল না। তার পরেও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোক জুটিয়ে শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে এদিন অভিনন্দন যাত্রা হয়। মিছিলে জাতীয় সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। যাত্রী বোঝাই বাস থেকে শুরু করে সমস্ত ধরনের যানবাহন দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। দুপুর ১২টা থেকেই কর্মীরা কলেজ মোড়ে জমায়েত হতে শুরু করে। ৩টে নাগাদ দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও রায়গঞ্জ সংসদ সদস্য তথা কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী পৌঁছন। ততক্ষণে উপস্থিত কর্মীরা অধৈর্য হয়ে এদিক ওদিক ছড়িয়ে পড়ে। মিছিল শুরুর নির্দিষ্ট স্থান থকে অনেকটা এগিয়ে চলে আসে। তাদের একত্রিত রাখতে গেরুয়া বাহিনী বার বার মানব বন্ধন করে। যাত্রার শুরুতেই চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। সড়কের যানজট, দিলীপবাবুর লোকেশন এবং মিছিসের সামনের পরিস্থিতি ওয়াকিটকির মাধ্যমে বার্তা আদান প্রদান চলে। মিছিলের শুরুতে দেবশ্রী চৌধুরি অল্প সময়ের জন্য থেকে চলে যান।
পুলিসের অনুমতি না মিললেও অভিযাত্রা প্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে বক্তব্য রাখার, সাধারন মানুষের সঙ্গে থাকার। হাজার হাজার মানুষ এসেছে। তারা সিএএ সমর্থনে নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানাতে চায়। মামলা করে গণতন্ত্রেকে আটকান যায় না। যারা নৈতিক ভাবে হেরে যায় তারা পুলিস প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে এসব করে। এতে হিতে বিপরীত হবে।
যান নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে বিজেপি’র ডালখোলা টাউন কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট গৌতম দে ওরফে বাবু বলেন, এদিন আমরা ওয়াকিটকি ব্যবহার করেছি। মিছিলের মাঝে ফাঁকা যেন না থাকে, সামনে যানজট সহ বিভিন্ন বিষয়ে একে আপরের সঙ্গে যোগায়োগ করার জন্যই একাজ করা হয়েছে।
এদিন দিলীপবাবু বলেন, ডালখোলা সহ সব পুরসভাতেই পুরসভায় দুর্নীতি, স্বজনপোষণ চলেছে। এসবের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ ভোট দেবে। উন্নয়নের জন্য ভোট দেবেন। বিজপিতে ভোট দেবেন। পুরভোট ব্যালটে হবে— এপ্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, এসব সিএম ঠিক করতে পারবেন না। সেটা ইলেকশন কমিশন ঠিক করবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাবছেন ব্যালটে ভোট হলে জিতে যাবেন। কিন্তু ব্যালট বা ইভিএম জেতায় না, সাধারণ মানুষ ভোট দিয়ে জেতায়। তারা টিএমসিকে এবার ভোট দেবে না।
অভিনন্দন যাত্রা শেষে সংক্ষিপ্ত সভায় দিলীপবাবু বলেন, উদ্বাস্তুদের সম্মান দেওয়ার জন্য সংসদ সিএএ পাশ করেছে। যারা দীর্ঘ দিন থেকে পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে এসেছেন তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দল বলেছে। কিন্তু দেয়নি। এবার বিজেপি সরকার আইন করেছে। এতে সারা দেশের মানুষ খুশি। খুশি নন আমাদের দিদিমনি। খুশি নন সুজন চক্রবর্তী, বিমান বসুরা। অধীরবাবু, সোমেনবাবু খুশি নন। এতদিন কংগ্রেস সিপিএম টিএমসি শরণার্থীদের ভোটার বানিয়ে রেখেছে। আর বাংলায় শাসন করেছে। কিন্তু সেই মানুষগুলি উদ্বাস্তু থেকে গিয়েছেন, ভারতীয় হননি। নরেন্দ্র মোদি সেই মানুষগুলিকে ভারতীয় করার জন্য আইন করেছেন।
এদিকে এলাকা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য দেবশ্রী চৌধুরী মিছিলের শুরুতেই তিনি চলে যান। এনিয়ে কর্মীদের মধ্যে চর্চা শুরু হয়ে যায়। এই প্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, পুলিস যেহেতু কর্মসূচির পারমিশন দেয়নি তাই তাঁকে থাকতে না করেছি। তিনি মন্ত্রী তো। সম্প্রতি রায়গঞ্জে সিএএ সমর্থনে প্রচারে গিয়ে সংসদ সদস্যের বিক্ষোভের মুখে পডার কথা তুললে দিলীপবাবু বলেন, সিএএ নিয়ে আমরা যখন রাস্তায় নামছি হাজার হাজার মানুষ আসছে। তা সহ্য করতে না পরে তৃণমূলই লোক দিয়ে ওই ধরনের অগণতান্ত্রিক কাজ করছে।
এদিন দলের কর্মসূচিতে জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ি, সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সেন, ডালখোলা টাউন মণ্ডল সভাপতি হরিমোহন মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মিছিলের অনুমতি নিয়ে ইসলামপুর পুলিস জেলার এসপি সচিন মক্কর বলেন, অনুমতি ছিল না। তবে এখনও পর্যন্ত এফআইআর করা হয়নি।