বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বৃহস্পতিবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গভীর রাতে আবগারি দপ্তরের কর্মী আধিকারিকরা হেমানপুর গ্রামের ওই গোপন ডেরায় অভিযান চালায়। যদিও কারবারিরা বেগতিক বুঝে আগেই কারখানা ছেড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ডালখোলা, করণদিঘি ছাড়াও হেমতাবাদ, রায়গঞ্জের বিভিন্ন গ্রামেও এধরনের আন্তঃরাজ্য জাল মদ তৈরি ও পাচার চক্র সক্রিয় থাকতে পারে বলে আবগারি দপ্তরের আধিকারিকরা আশঙ্কা করছেন। বেআইনি জাল মদের কারবার বন্ধ করতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে গত কয়েক মাসে বিপুল পরিমাণ মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
উত্তর দিনাজপুর ডিস্ট্রিক্ট সুপারিনটেনডেন্ট অব এক্সাইজ তাপস কুমার মাইতি বলেন, ডালখোলায় জাল বিলিতি মদ তৈরির একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার কাঁচামাল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আন্তঃরাজ্য একটি জাল মদ তৈরির চক্র সক্রিয় রয়েছে।
ডালখোলা শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে হেমানপুর গ্রামে বৃহস্পতিবার আবগারি দপ্তরের একটি দল হানা দিয়েছিল। সেখানে একটি টিনের বেড়া দেওয়া জায়গায় ভিতরে টিনের চালা ঘরে চলছিল জাল মদ তৈরির কারবার। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগেই ওই পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়। কিন্তু ঘেরাটোপের আড়ালে জাল মদ তৈরির কারবার চলতে থাকায় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। তারাই আবগারি দপ্তরের কর্তাদের নজরে বিষয়টি আনলে বৃহস্পতিবার প্রচুর পরিমাণ জাল বিলেতি মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়। আবগারি দপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কার জমিতে ওই পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছিল, কারা কারবারে জড়িত তাদের খোঁজে তদন্ত শুরু হয়েছে। দপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে ৪৩৪ লিটার সিলকরা জাল বিলেতি মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ৪২৮৪টি জাল হলোগ্রাম, ১৩৩৬টি লেবেল, ১১০ লিটার স্পিরিট, ৪০ লিটার মদ তৈরির রং বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন নামী দামি কোম্পানির জাল মদ এখানে তৈরি করে সিল করে পাচার করা হতো। জাল মদ তৈরির কারখানায় কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় যে জমিতে ওই কারখানা গড়ে উঠেছিল, বিএলআরও দপ্তরে সংশ্লিষ্ট জমির মালিক কে জানতে চেয়ে আবগারি দপ্তর শীঘ্রই চিঠি পাঠাবে।
ডালখোলা সংলগ্ন বিহারের বিভিন্ন গ্রাম রয়েছে। দপ্তরের আধিকারিকরা বলেন, বিহারে মদ নিষিদ্ধ হওয়ায় ডালখোলার গ্রামে জাল মদ তৈরির একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। হরিয়ানার লেবেল লাগানো ওই জাল মদ বিহারে পাচার হতো। তবে ওই লেবেলগুলি আসল না নকল সেটাও যাচাই করা হচ্ছে। দপ্তরের আধিকারিকরা তদন্তে নেমে জানতে পেরেছেন, জাল মদ তৈরির কারখানা চালানো একশ্রেণীর কারবারি ঘনঘন ঠিকানাও বদল করছে। মূলত প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় এধরনের জাল কারখানা গড়ে উঠলেও দ্রুত জালমদ অন্যত্র পাচার হয়ে যাচ্ছে। উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জাতীয় সড়কের ধারে অসংখ্য লাইন হোটেল চলছে। অভিযোগ, অধিকাংশ হোটেলে জাল বিলেতি মদের কারবারিরাও সক্রিয় রয়েছে।