রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
প্রায় একমাস আগে শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র পরিষদ পদ থেকে পরিমলবাবুর ইস্তফা দেওয়ার কথা চাউর হয়। ওই ঘটনার পর থেকেই পরিমলবাবু নিজের চেম্বারে যাচ্ছিলেন না। পর পর পুরসভার দু’টি মাসিক অধিবেশন এবং মেয়র পরিষদদের বৈঠকেও গরহাজির ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিনি দলের এবং বামফ্রন্টের কোনও কর্মসূচিতেও যোগ দিচ্ছেন না। তিনি দলীয় পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন বলে চাউর হয়েছে। এতদিন পর্যন্ত সিপিএম নেতারা, মেয়র এবং পরিমলবাবু কেউ বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি। এদিন দলের দার্জিলিং জেলা কার্যালয় অনিল বিশ্বাস ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য তথা মেয়র অশোকবাবু বলেন, পরিমলবাবুকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর পদের দায়িত্ব মেয়র হিসেবে আমি দেখভাল করব।
সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, দলের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার উপস্থিত ছিলেন। সূর্যকান্তবাবু বলেন, দলের শৃঙ্খলা যেই ভঙ্গ করবে, তাঁর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে রাজ্যে বেশকিছু দলীয় কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে অভিযুক্তদের দল থেকে এক্সপেল করতে একদিনও সময় লাগবে না।
শহরে সিপিএমের হেভিওয়েট কাউন্সিলারদের মধ্যে পরিমল মিত্র অন্যতম। ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মূলত পার্টির বস্তি উন্নয়ন কমিটি, উদ্বাস্তু কলোনি উন্নয়ন কমিটি, শ্রমিক সংগঠন এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের দায়িত্ব সামাল দিচ্ছিলেন। গত পুরভোটে জয়ী হওয়ার পর তাঁকে পুরসভার মেয়র পরিষদ সদস্য (বস্তি উন্নয়ন বিভাগ) করা হয়। পরিমলবাবুর অনুগামীরা বলেন,তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। প্রায় একমাস আগে তিনি নিজেই মেয়র পরিষদ এবং দলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। পদত্যাগপত্রে তিনি একগুচ্ছ কারণও উল্লেখ করেছেন। পরিমলবাবু অবশ্য বলেন, অব্যাহতির ব্যাপারে এখনও কোনও চিঠি পাইনি। তাই বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।
হাতে গোনা আর কিছুদিন পরই শিলিগুড়ি পুরসভার ভোট। এই অবস্থায় পরিমল ও অশোকের বিবাদকে কেন্দ্র করে সিপিএমের কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এসেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, সিপিএমের অন্দরে গোষ্ঠী কোন্দল অনেক দিনের। এবার পরিমলবাবুকে পদ থেকে সরানোর জেরে সেই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। এনিয়ে সিপিএমের জেলা নেতারা চরম অস্বস্থিতিতে পড়েছেন। তাঁদের একাংশের ধারণা, দুই নেতার বিরোধের জেরে পুর ভোটের ময়দানে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে এবার পরিমলবাবু অবস্থান কী হয়, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন, পরিমলবাবু বিজেপিতে যেতে পারেন। আবার কেউ বলছেন, তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা পরিমলবাবুর বন্ধু। তিনি তৃণমূলেরও যেতে পারেন। পরিমলবাবু অবশ্য এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি।