কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
গত সোমবার মাটিগাড়ার বড় রাজাঝাড়ের বাসিন্দা কৈলাস বর্মনের(৫০) অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। পুলিস মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মেডিক্যালে পাঠায়। মৃতের পরিবারের দাবি, সোমবার বিকেল হয়ে যাওয়ায় মেডিক্যালে ময়নাতদন্ত হয়নি। রাতে মৃতদেহ মেডিক্যালের মর্গে রাখতে বলা হয়। মৃতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, দেহ মর্গে রাখার জন্য সেখানে কর্তব্যরত এককর্মী ৩০০ টাকা দাবি করেন। এটাই না কি একদিন মৃতদেহ মর্গে রাখার চার্জ বলে জানানো হয়। কোনওরকম বকবিতণ্ডায় না গিয়ে মৃতের পরিজনরা ৩০০ টাকা দিয়ে মৃতদেহ মর্গে রাখেন। পরের দিন মঙ্গলবার মৃতের পরিজনরা দেহটি ময়নাতদন্ত করাতে এলে ডোমরা ৫০০ টাকা চেয়ে বসেন।
মৃতের পরিবারের সদস্য রঞ্জিত সিংহ বলেন, আমরা প্রথমদিন ৩০০ টাকা দিয়ে দিই। কিন্তু পরের দিন ৫০০ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তারা নানাভাবে হুমকি দিতে থাকে। বাড়ির সকলেরেই মনখারাপ ছিল তাই ঝামেলা না করে দু’জন ডোমকে ২০০ টাকা হাতে দিই। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ ছাড়া হয়। ময়নাতদন্ত করানোর পর মৃতদেহ সেলাই করার জন্য ফের ২০০০ টাকা চাওয়া হয়। টাকা না দিলে কাটা অংশ সেলাই না করেই দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। আমরা স্থানীয় বাসিন্দা পরিচয় দিলে ওরা ৪০০ টাকা নিয়ে মৃতদেহ ছাড়ে। এমন ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। এটা কর্তৃপক্ষের দেখা দরকার।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, আমাকে আজ পর্যন্ত কেউ ময়নাতদন্ত রুমে টাকা নেওয়ার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেননি। সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা বিনামূল্যে দেওয়া হয়। কেউ টাকা চাইলে তা না দিয়ে আমাদের কাছে সরাসরি আসা উচিত। আমরা সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি।
মেডিক্যালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, আমাকে কেউ কোনও অভিযোগ করেননি। এরকম হওয়ার কথা নয়। আমি পরবর্তী রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করব। সুপারের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
রাজ্য সরকার হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের নিঃশুল্ক ওষুধের ব্যবস্থা করেছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ ছাড় দিতে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান খুলেছে। সরকার যখন পরিষেবা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে তখন মেডিক্যালের মতো গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মর্গে টাকা নিয়ে পরিষেবা দেওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। কিন্তু ইদানিংকালে চাওয়া পাওয়ার বহর কয়েকগুণ বেড়েছে। যা নিয়ে প্রতিদিনই কমবেশি মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মর্গের একাংশ কর্মী বাকবিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এসব নিয়ে কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না। তারা লিখিত অভিযোগের অপেক্ষাতেই বসে থাকছে। অভিযোগ, ময়নাতদন্তের জন্য মৃতের শরীরের কতখানি অংশ কাটা হয়েছে তা সেলাইয়ের উপর ওই কর্মীরা নির্দিষ্ট অঙ্কের রেট বেঁধে রেখেছেন। মাথার খুলি কাটা হলে একরকম রেট, শরীরের বিভিন্ন অংশ কাটার জন্য আলাদা আলাদা রেট স্থির করা আছে। এই রেট সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা। মর্গ রুমের এমন কাণ্ডকারখানা দেখার জন্য ময়নাতদন্ত করাতে আসা মৃতের পরিজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নজরদারি চালাতে আর্জি জানিয়েছে।