সংবাদদাতা, রায়গঞ্জ: সাধারণতন্ত্র দিবসের আগেপিছে নাশকতা রুখতে উত্তর দিনাজপুর জেলাজুড়ে সীমান্তবর্তী থানা এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তার সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া প্রায় সমস্ত থানা এলাকাতেই চলছে নাকা চেকিং। কোনওভাবেই কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর উদ্দেশ্যে কেউ যাতে এই জেলায় প্রবেশ না করতে পারে, সেজন্য জোরদার নাকা চেকিং চালু করেছেন রায়গঞ্জ এবং ইসলামপুর পুলিস জেলার শীর্ষ আধিকারিকরা। এর পাশাপাশি সীমা সুরক্ষা বাহিনীর তৎপরতাও জোরদার হয়েছে। রুটিন পেট্রোলিংয়ের পাশাপাশি বাড়তি নজরদারি রাখা হচ্ছে কাঁটাতার সংলগ্ন এলাকায়। সাধারণতন্ত্র দিবসে কোনও অনুষ্ঠান ঘিরে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকেও নজর রাখছে পুলিস এবং বিএসএফ।
পাশাপাশি শহর সংলগ্ন বিভিন্ন হোটেল ও লজগুলিতে কে আসছে, কে থাকছে, সেব্যাপারেও খোঁজ খবর নিচ্ছে পুলিস। সন্দেহজনক গতিবিধির ওপর নজরদারি রাখা হচ্ছে। কোনভাবেই সাধারণতন্ত্র দিবসকে ঘিরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না ঘটে, সে বিষয়ে সজাগ রয়েছে পুলিস প্রশাসন। বিভিন্ন স্টেশন এলাকা, বাস স্ট্যান্ড সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সাদা পোশাকের পুলিস নজরদারি চালাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ পুলিসের দল মোতায়েন করা হয়েছে।
এবিষয়ে ইসলামপুর পুলিস জেলার সুপার শচিন মক্কর বলেন, বিভিন্ন থানা এলাকায় আমরা সাধারণতন্ত্র দিবসকে সামনে রেখে নাকা চেকিং শুরু করেছি। এই নাকা চেকিং চলাকালীন প্রায় সমস্ত গাড়িতেই তল্লাশি করা হচ্ছে। সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন যাতে কোনওভাবেই কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা আমাদের পুলিস জেলায় না ঘটে সে বিষয়ে আমরা নজর রেখেছি। এর পাশাপাশি বিভিন্ন হোটেল ও লজগুলিতে বাইরে থেকে যারা আসছে, তাদের পরিচয় পত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ বাইরে থেকে কি উদ্দেশ্যে শহরে প্রবেশ করছে, সেদিকে নজর রাখছি।
উত্তর দিনাজপুর জেলার ১৮৭ কিলোমিটার দীর্ঘ জাতীয় সড়ক রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে অপরাধ করে জাতীয় সড়ক দিয়ে জেলায় প্রবেশ করা বা অপরাধের উদ্দেশ্যেই জেলায় প্রবেশ করার নানান রেকর্ড রয়েছে। সাধারণতন্ত্র দিবসকে সামনে রেখে যাতে কোনভাবেই জাতীয় সড়কে ব্যবহার করে জেলার কোনও প্রান্তে কোনও নাশকতামূলক কাজ করতে কেউ প্রবেশ না করতে পারে, সেদিকে নজর রাখছে পুলিস প্রশাসন। সেদিন জেলার বিভিন্ন অংশে নানান অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। বিভিন্ন বিশিষ্ট নেতা-মন্ত্রী আমলারা সেসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। তা নিয়ে যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেদিকেও নজর রাখছে পুলিস।
বিশেষত সীমান্ত সংলগ্ন বিভিন্ন থানা, যেমন গোয়ালপোখর চাকুলিয়া, ইটাহার, হেমতাবাদ, কালিয়াগঞ্জ ইত্যাদি জায়গায় নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিস। সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় বাইরে থেকে আসা মানুষদের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় নতুন কেউ এলে তার বিস্তারিত তথ্য গোপনে সংগ্রহ করছে পুলিস।
একইভাবে প্রায় ২২২ কিলোমিটার বিস্তৃত সীমান্ত এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছে বিএসএফ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন শিফটে বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। জওয়ানরা সীমান্তে কাঁটাতার সংলগ্ন এলাকাগুলোতে যথেষ্ট বিচক্ষণতার সঙ্গে নজরদারি চালাচ্ছেন। কোথাও কোনও সন্দেহজনক গতিবিধি যাতে না হয়, সেদিকে নজরদারি রাখতে সীমান্ত এলাকায় কাউকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেলে তার পরিচয়পত্র যাচাই করছেন তাঁরা। ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করার উদ্দেশ্য সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হচ্ছে।