ব্যবসাসূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকা ... বিশদ
পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা নীহারবাবুর কট্টর বিরোধী বলে পরিচিত কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশের যেকোনও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের পূর্বতন প্রধানদের পরবর্তী প্রধানরা সম্মান দেন। উৎসব অনুষ্ঠানে পূর্বসূরীদের বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে নিমন্ত্রন করা হয়। ইংলিশবাজার পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান আমাদের সম্মান দেন না। সংশোধনাগারের কয়েদীদের মতো ওয়ার্ডের নম্বর ধরে আমাদের নিমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়। ওয়ার্ডের নম্বরই আমাদের একমাত্র পরিচয় হিসাবে গণ্য করা হয়। ফলে অনুষ্ঠানে গিয়ে কেউ সম্মান হারাতে চান না। তিনি আরও বলেন, অনাস্থায় সই করা সিংহভাগ কাউন্সিলাই এদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নেননি। আমরা এখনও বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেই রয়েছি। শুধুমাত্র দলের নির্দেশে আস্থা ভোট ডাকার সিদ্ধান্ত থেকে বিরত হয়েছিলাম। আর কিছু নয়।
এদিনের অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়া শহরের হেভিওয়েট কাউন্সিলারদের অন্যতম নরেন্দ্রনাথ তেওয়ারি। তিনি আবার ইংলিশবাজার পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যানও। নন্দুবাবু বলেন, আমি এদিন জেলার বাইরে ছিলাম। তবে শহরে থাকলেও অনুষ্ঠানে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা আমার ছিল না। গতবারেও ওই অনুষ্ঠানে যাইনি। বর্তমান চেয়ারম্যান আমাকে একেবারেই সম্মান দেন না। বিষয়টি নিয়ে তাঁর চিন্তাভাবনা করা উচিত।
এদিকে, এদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া পুরসভার পূর্ত ও আইন বিভাগের সিআইসি তথা মালদহ জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অম্লান ভাদুড়ী বলেন, পুরসভার প্রতিটি অনুষ্ঠানেই আমি অংশ নিই। এদিনও আমি চেয়ারম্যানের ডাকে সাড়া দিয়ে শোভাযাত্রায় হেঁটেছি। এর পিছনে রাজনীতি খোঁজা উচিত নয়।
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার (বাবলা) বলেন, গত ৩০ বছর ধরে ইংলিশবাজার পুরসভার তরফে দিনটি পালন করা হচ্ছে। শহরের নেতাজি মোড়ে অনুষ্ঠান এবং সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তিতে মাল্যদানের পর শোভাযাত্রা করা হয়। এই বিশেষ দিনে নেতাজিকে সম্মান জানানো হয়। ব্যক্তিগত কোনও কাউন্সিলারকে সম্মান জানানোর জন্য কিন্তু পুরসভার তরফে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় না। তবে পুরসভার এই অনুষ্ঠান আধিকারিকদের তত্ত্বাবধানে হয়। নিমন্ত্রণপত্র পাঠানোর পাশাপাশি এদিন আমরা অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে মাইকেও কাউন্সিলারদের আহ্বান করি। কাউন্সিলারদের একাংশ অনুষ্ঠানে প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন।
নীহারবাবু বলেন, আমি কাউকে অসম্মান করি না। আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। আসলে বর্তমান পুর বোর্ড ঠিক ভাবে চলুক, তা অনেকেই চান না। তাঁরাই বিভিন্ন সময়ে আমার সমালোচনা করছেন। তবে দলের কথা মাথায় রেখে তাঁদের বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত।
উল্লেখ্য, মাস পাঁচেক আগে ইংলিশবাজার পুরসভার সিংহভাগ তৃণমূল কাউন্সিলার নীহারবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। কৃষ্ণেন্দুবাবু বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের মুখ হিসাবে উঠে আসেন। তিনিই বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কাউন্সিলারদের হয়ে নীহারবাবুর বিরুদ্ধে বারবার বিষোদ্গার করছিলেন। বিষয়টি নিয়ে দলের উপরমহল ক্ষুব্ধ হয়। দলের চাপে বিক্ষুব্ধরা সাময়িক পিছু হঠে। তবে তলে তলে তাঁরা নীহারবাবুকে বেকায়দায় ফেলতে উঠেপড়ে লেগেছেন। পুর ভোটের আগে বোর্ড মিটিংয়ে যাতে নীহারবাবু বাজেট পাশ করাতে না পারেন তারজন্য আটঘাট বেঁধে বিক্ষুব্ধরা ময়দানে নামতে চলেছেন বলে জানা গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলাররা দফায় দফায় নিজেদের মধ্যে আলোচনা সেরেছেন বলেও তৃণমূলের একাংশ জানিয়েছেন। এরই মধ্যে এদিনের অনুষ্ঠানে বিক্ষুব্ধদের না আসার বিষয়টি তৃণমূলের অন্দরে নতুন করে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠল। এভাবে চললে দলের ক্ষতি হবে বলেই তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন।