ব্যবসাসূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকা ... বিশদ
রায়গঞ্জ জেলা পুলিসের ডিএসপি গোবিন্দ শিকদার বলেন, রায়গঞ্জে ব্রাউন সুগারের নেশার কারবারিরা সক্রিয় রয়েছে। ওই নেশার মূল কারবারিদের কোনওভাবেই রেয়াত করা হবে না।
রায়গঞ্জ শহরের বাসিন্দারা বলেন, চার বছর ধরে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র পাতার কারবারিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পাড়ায় পাড়ায় নেশার ঠেক গজিয়ে উঠেছে। ওই নেশায় আসক্তরা এলাকায় এলাকায় চুরি, ছিনতাই সহ নানা অপরাধ সংগঠিত করছে। রায়গঞ্জ শহরে দিনের বেলা কয়েকটি চুরি, লুটপাটের ঘটনায় নেশায় আসক্তদের জড়িত থাকার যোগ পুলিসের তদন্তেও উঠে এসেছে। নেশাগ্রস্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, শহরে এরপর অপরাধ দমন পুলিসেরও নাগালের বাইরে চলে যাবে বলে অনেকের ধারণা।
ওয়েস্ট দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্সের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর কুণ্ডু বলেন, রায়গঞ্জে বারবার অপরাধীদের টার্গেট হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। যুব সমাজ যেভাবে পাতার নেশায় আসক্ত তাতে ভবিষ্যতে ব্যবসায়ীদের আরও নিরাপত্তার অভাব হবে। রায়গঞ্জ শহরের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বিশিষ্ট চিকিৎসক শান্তনু দাস বলেন, ১০ বছর আগে বছরে পাঁচ- সাত জন ব্রাউন সুগারের নেশায় আসক্তরা চিকিৎসার জন্য চেম্বারে আসত। এখন প্রত্যেক মাসে অন্তত ১০ জন আসক্ত চেম্বারে আসছে। আসক্তরা অনেকে নেশা ছাড়তেও চায়। কিন্তু ভয়ঙ্কর ওই মারণ নেশা থেকে বেরিয়ে আসার কাজটা খুবই কঠিন। রোগীর মানসিক জেদ সদিচ্ছা থাকলে চিকিৎসার মাধ্যমে নেশামুক্ত হওয়া সম্ভব। তবে ব্রাউন সুগারের ওই নেশার ফলে মস্তিষ্কের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে। আসক্তরা ধীরে ধীরে ভালো মন্দ বিচার বুদ্ধির কথা ভুলতে বসে। এমনকী নেশার টাকা পেতে প্রয়োজনে বাবা, মা এমনকী প্রিয়জনদেরও খুন করতে দ্বিতীয়বার ভাবে না। তাই কোনও পরিবারের ছেলেমেয়েরা যদি এধরনের নেশায় আসক্ত হয়, তাকে শুরুতেই বুঝিয়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া দরকার। রায়গঞ্জে যুব সমাজ যেভাবে নেশায় আসক্ত হচ্ছে তা খুবই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনিকভাবে এটা ঠেকাতে যথাযথ পদক্ষেপ করা উচিত।
রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, রায়গঞ্জে গত কয়েক বছরে ব্রাউন সুগারের কারবার বেড়ে গিয়েছে। এর পিছনে মূল কারবারিদের বিরুদ্ধে পুলিস ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দু’দিন আগেই পুলিস সুপারকে আমার উদ্বেগের কথা জানিয়ে এসেছি। বিজেপির জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ি বলেন, শাসক দলের প্রভাবশালীরা মাদকের কারবারে জড়িত। তাই আসল কারবারিদের বিরুদ্ধে পুলিস প্রশাসনও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। রায়গঞ্জ পুরসভার তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, ব্রাউন সুগারের নেশায় যুব সমাজ যেভাবে আসক্ত হচ্ছে তা খুবই উদ্বেগের। নেশা ঠেকানোটাই এখন আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সকলে মিলেই যুব সমাজকে নেশার কবল থেকে রক্ষা করতে হবে। আমরা পুলিস প্রশাসনকে বলেছি ওই কারবারে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের যেন রেয়াত করা না হয়। তাদের গ্রেপ্তার করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক।