গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
কৃষকদের অভিযোগ, সরকারি অর্থ খরচ করে তাঁদের উচ্চফলনশীল বোরো ধান চাষের জন্য উন্নতমানের ধানের বীজ দেওয়ার কথা থাকলেও দপ্তর নিম্নমানের ধানের বীজ সরবরাহ করেছে। এরসঙ্গে দপ্তরের একাংশ কর্মীর নিম্নমানের বীজ বিক্রয়কারীদের যোগসাজশ থাকতে পারে। এমন অবস্থায় তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। বাধ্য হয়ে এখন প্রান্তিক বোরো ধান চাষিদের নতুন করে বাজার থেকে ধানের বীজ কিনে বীজতলা করতে হচ্ছে। এরফলে সময় ও অর্থ দুইই ক্ষতি হচ্ছে। কৃষকরা সেই ক্ষতিপূরণেরও দাবি জানিয়েছেন।
মাতালহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের ভুতকুড়া গ্রামের বাসিন্দা শচীন বর্মন, বিপুল শর্মা বলেন, কৃষিদপ্তর থেকে আমাদের ৫-৬ কেজি করে বোরো ধানের বীজ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই ধানের বীজ থেকে কোন অঙ্কুরই বেরয়নি। এখন বাজার থেকে ধানের বীজ কিনে ফের বীজতলা করতে হয়েছে। টাকা ও সময় আমাদের দুই নষ্ট হয়ে গেল। এরজন্য জমিতে ধান লাগাতে দেরি হয়ে যাবে। আমাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
ওই এলাকার আরও এক কৃষক দিলীপ শর্মা বলেন, বীজ দেওয়ার ক্ষেত্রে চরম অনিয়ম হয়েছে। সরকার কৃষকদের কথা মাথায় রেখে উন্নতমানের উচ্চফলনশীল বীজ দিলেও আমাদের কৃষিদপ্তর থেকে খারাপ বীজ দেওয়া হয়েছে। আমাদের ক্ষতি পূরণ দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, মাতালহাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কৃষকদের প্রায় ৭৫০ কেজি ওই খারাপ ধান বীজ দেওয়া হয়েছে। ওই বীজ দিয়ে প্রায় ১৫০ বিঘা জমির বোরো ধান লাগানো যেত।
ধান বীজ বণ্টন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন দিনহাটা-১ ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা সুবোধচন্দ্র মল্লিক। তিনি বলেন, অনিয়মের অভিযোগ ঠিক নয়। কৃষকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে লিখিতভাবে জেলার উপকৃষি অধিকর্তাকে চিঠি লিখে বিষয়টি জানিয়েছি। খাদ্য সুরক্ষা মিশন স্কিমের দায়িত্বে থাকা সহ কৃষি অধিকর্তা গোপালচন্দ্র সাহা ও সিড কর্পোরেশনের জেলা ম্যানেজার অশোক ভাদুরি সহ আমি সেখানে গিয়ে বীজতলা দেখে এসেছি। বেশি ঠান্ডার জন্য এমনটা হতে পারে।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওয়েস্ট বেঙ্গল সিড কর্পোরেশন থেকে ধান বীজ নিয়ে এসে বিভিন্ন সময় সেগুলি ব্লকের কৃষকদের বিতরণ করা হয়েছে। এই বছর উন্নতমানের উচ্চফলনশীল ‘ডিআরআর ৪২’ প্রজাতির বোর ধান বীজ প্রদর্শনী করার জন্য মাতালহাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শতাধিক কৃষককে প্রায় চার কুইন্টাল বোরো ধানের বীজ বিতরণ করা হয়। ওই ধানের বীজ থেকে ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান লাগাতে পারবেন কৃষকরা। সেই মতো দিনহাটা-১ ব্লকের মাতালহাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শতাধিক কৃষককে ওই বীজ দেওয়া হয়। কিন্তু কৃষকরা সেই বোর ধানের বীজ দিয়ে বীজতলা তৈরির জন্য জমিতে ফেললেও তা থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ ধানের কোন অঙ্কুর বের হয়নি। এখন ওই কৃষকদের ফের নতুন করে বাজার থেকে ধানের বীজ কিনে বীজতালা তৈরি করতে হচ্ছে। বীজতলা তৈরিতে দেরি হওয়ার ফলে তাঁদের বোরো ধান চাষেও দেরি হবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।