কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
বিপ্লব মিত্র তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার পর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের হাতবদল নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি। তারপর অবশ্য বছর ঘোরা অবধিও সেই জেলা পরিষদ ধরে রাখা যায়নি। গঙ্গারামপুর পুরসভায় অনাস্থা নিয়েও যথেষ্ট হইচই হয়েছে। সেই পুরসভাও শেষপর্যন্ত তৃণমূল নিজের দখলেই রেখেছে। মোটামুটি যে দু’টি প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘাসফুল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন বিপ্লব, সেদু’টির একটিও বেশিদিন টেকেনি। এখন সামনে গঙ্গারামপুর পুরভোট। গঙ্গারামপুর বিপ্লববাবুর ঘাঁটি বলেও পরিচিত। তাই এবার আর অনাস্থা নয়, সম্মুখ সমরে বিপ্লববাবুর দলে যোগদানের ফায়দা কতখানি তুলতে পারে গেরুয়া শিবির, সেটাই দেখার।
লোকসভা নির্বাচনের পর শাসক দল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখান জেলার পোড়খাওয়া রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বিপ্লব মিত্র। বিজেপিতে যোগদান করার পর জেলা থেকে তৃণমূলকে সাফ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেও জেলা পরিষদ থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত— বিপ্লবের রাজনৈতিক প্রভাব তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। লোকসভা নির্বাচনের হারের পর তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ থেকে বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপরই দলবদল করেন বিপ্লব। তাঁর সঙ্গে তাঁরা দলবদল করেছিলেন তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই এখন আবার তৃণমূলে। তাই নিজের প্রভাব বোঝানোর জন্য এখন বিপ্লববাবুর ভরসা গঙ্গারামপুর পুরসভা দখল।
বিপ্লব মিত্র বলেন, এখনও পুরসভা নির্বাচনের অনেক দেরি রয়েছে। এখনও দলীয়ভাবে পুরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনও বৈঠক হয়নি। জেলার সাধারণ মানুষ এখনও আমার সঙ্গে রয়েছেন। ভোটকে সামনে রেখে রণকৌশল তৈরী করা হবে। আগে মিটিং হোক। তারপর এব্যাপারে কথা বলব।
বিজেপির সংসদ সদস্য সুকান্ত মজুমদার বলেন, বিপ্লব মিত্র অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি যে দলেই থাকুক না কেন, তাঁর যথেষ্ট রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা রণকৌশল তৈরী করব পুরসভা নির্বাচনের জন্য। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে আমাদের জয় নিশ্চিত।
বিজেপির গঙ্গারামপুর টাউন মণ্ডল সভাপতি মণিরত্নম সাহা বলেন, বর্তমানে গঙ্গারামপুর শহরে তৃণমূলের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কেউ নেই। যাঁদের হাত ধরে গঙ্গারামপুর শহরে তৃণমূলের জয় এসেছে, তাঁরা বর্তমানে আমাদের দলে।
যদিও জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব বিপ্লব মিত্রের রাজনৈতিক প্রভাবকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চায়নি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা বলেন, পুরসভা নির্বাচনে কোনও নেতার প্রভাব আমাদের দলে পড়বে না। এখন জল আর ঢেউ আলাদা হয়ে গিয়েছে। যারা আমাদের দলে নেই, তাদের কোনও অস্তিত্ব নেই।
গঙ্গারামপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেসের আহ্বায়ক অশোক বর্ধন বলেন, লোকসভা নির্বাচনের পর আমরা শহরে তৃণমূল কংগ্রেসেকে শক্তিশালী করে তুলেছি। বিজেপির পুরোনো কর্মীদের আমাদের দলে যোগদান করিয়েছি। লোকসভা নির্বাচনে যারা আমাদের থেকে দূরে সরে গিয়েছিল, তারা এখন আমাদের সঙ্গে রয়েছে। শহরে কোনও বিজেপি নেতার প্রভাব কাজ করবে না। যাঁরা নিজেদের বড় নেতৃত্ব বলে মনে করেন, তাঁরা জেলা পরিষদ ও গঙ্গারামপুর পুরসভায় এর আগে কিছুই করতে পারেননি। আগামীতেও কোনও জায়গা করতে পারবেন না।