কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
২০১৫ সালের মে মাসে পুরভোট হওয়ার পর এককভাবে দিনহাটা পুরসভার দখল নেয় ফব। পুরসভার ১৬টি আসনের মধ্যে ফব ১০টি, সিপিএম ও তৃণমূল তিনটি করে আসনে জয়ী হয়েছিল। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর ফব’র ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী প্রার্থী উদয়ন গুহকে দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যান করা হয়। ভাইস চেয়ারম্যান হন ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী সিপিএম প্রার্থী শুভময় চক্রবর্তী। এরপর ২০১৫ সালের শেষের দিকে ফব ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন উদয়ন গুহ সহ ফব’র বাকি আট কাউন্সিলার ও সিপিএমের এক কাউন্সিলার। গত লোকসভা নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূলের দখলে থাকা পুরসভার ১৬টি আসনের মধ্যে মাত্র একটি ওয়ার্ডেই লিড পায় তৃণমূল কংগ্রেস। বাকি ১৫টিতেই লিড ছিল বিজেপির।
দিনহাটা পুরসভার বাসিন্দা বিজেপির জেলা সম্পাদক সুদেব কর্মকার বলেন, তৃণমূল পরিচালিত দিনহাটা পুরসভা অনিয়মের আখড়া হয়ে গিয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে পুরসভা এলাকার মানুষ ভোটবাক্সে তার উত্তর দিয়ে দিয়েছেন। চেয়ারম্যান তাঁর নিজের নির্বাচনী ওয়ার্ডেও দলকে জেতাতে পারেননি। তাই প্রার্থী বদল হোক, আর না হোক। এবারের পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল দিনহাটায় একটিও আসনও জিততে পারবে না।
ফব’র জেলা সম্পাদক অক্ষয় ঠাকুর বলেন, দিনহাটা শহরের মানুষ বরাবর আমাদেরই চায়। গত পুরসভা ভোটে মানুষ ফব’কে ভোট দিয়ে জয়ী করেছিলেন। কিন্তু মানুষের সেই মতামতকে নিজের স্বার্থে তৃণমূলের কাছে বিক্রি করে দেন উদয়ন গুহ। তাই এবার পুরসভার ভোটে দিনহাটার মানুষ উদয়ন বিরোধী ভোট দিয়ে বুঝিয়ে দেবেন। মানুষ ফব’কেই পুরসভায় নিয়ে আসবেন।
এবারের পুরসভা নির্বাচন উদয়নবাবুর কাছে যে চ্যালেঞ্জ, সেকথা স্বীকার করে নিয়ে দিনহাটার বিধায়ক ও পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, যেভাবে ভোটে লড়াই হয় সেভাবেই লড়াই করতে হবে। মানুষ শহরের উন্নয়নের কাজ দেখে ভোট দেবেন। বিরোধীদের পুরসভা দখলের দাবি নিয়ে উদয়নবাবুর কটাক্ষ করে বলেন, অনেকেই অনেক কথা বলতে পারেন। কথা বলতে তো আর টাকা লাগে না। ভোটের ফলেই সব প্রমাণ হয়ে যাবে।
দিনহাটা পুরসভার একাধিক কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে সামনে আসায় এবারের পুরসভা নির্বাচনে তাঁদের টিকিট দেওয়া হবে না বলে তৃণমূলের অন্দরের খবর। তৃণমূল সূত্রের খবর, পিকে টিমের বিশেষ নজরে রয়েছে দিনহাটা পুরসভার দিকে। ইতিমধ্যেই পিকের টিমের সদস্যরা পুসভার কাউন্সিলারদের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়েছেন। কোন কোন কাউন্সিলার অল্প সময়েই প্রতিপত্তি বাড়িয়েছেন, তাঁদের বিষয়েও খোঁজখবর নিয়ে তালিকা তৈরি করেছে টিম পিক। দিনহাটার একাধিক ওয়ার্ডের কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ‘দিদিকে বলো’তে অভিযোগ জানিয়েছেন পুরসভা এলাকার বাসিন্দারা। এদিকে আসন সংরক্ষণের গেরোয় পুরসভার ভোটে একাধিক দাপুটে তৃণমূল কাউন্সিলার নিজের জেতা আসনে দাঁড়াতে পারবেন না। অন্য ওয়ার্ড থেকে ওই কাউন্সিলাররা টিকিট না পেলে তাঁদের বিরোধী শিবিরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে অনেকেই পুরসভা ভোটের আগে ঘাসফুল শিবির ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যাওয়ার জন্য গোপনে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের খবর। সেক্ষেত্রে ভোটের মুখে দলের একটা বড় অংশ বিরোধী দলে গেলে চাপে পড়বে তৃণমূল শিবির।