বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
মালদহের পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, আগে একই সঙ্গে বিশাল অঙ্কের জাল নোট পাচার করা হতো। বেশ কয়েকবার পুলিসের অভিযানে ওই পাচারের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় সমস্যায় পড়ে যায় পাচার চক্রের পান্ডারা। সম্প্রতি আমাদের নজরে এসেছে ছোট অঙ্কের জাল নোট পাচারের চেষ্টা ক্রমশ বাড়ছে। আমরা বিষয়টি লক্ষ্য করে আমাদের অভিযানের ধারাতেও প্রয়োজনীয় বদল আনছি। পাচারকারীরা যে কৌশলই নিক, তাতে সাফল্য আসবে না।
উল্লেখ্য, মালদহে একসঙ্গে ২০ লক্ষ বা ৫০ লক্ষ টাকা অঙ্কের জালনোট পাচারের চেষ্টা অসংখ্যবার হয়েছে। নোট বাতিলের পরে সামান্য কয়েক দিন জালনোট পাচারে ভাটা পড়লেও পরে ফের চক্রটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। পুলিসের নজর এড়াতে পাচারকারীরা এবার খানিকটা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলা পুলিসের ক্রাইম ব্রাঞ্চের এক আধিকারিক বলেন, জাল নোট পাচারের উপর জেলা পুলিস ছাড়াও রাজ্য তথা দেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কড়া নজর রাখে। বাধ্য হয়েই বড় মাপের নোট পাচারের চেষ্টা থেকে সরে আসে পাচারকারীরা। কারণ বড় অঙ্কের জাল নোট পাচারের ঝুঁকি বেশি থাকে। পাশাপাশি জালনোট পাচারের চেষ্টা ব্যর্থ হলে একই সঙ্গে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয় তাদের। তাই এখন ছোট পরিমাণে জাল নোট পাচারের প্রবণতা বেড়েছে। আমাদের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে বড় অঙ্কের জাল নোট বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করে পৃথক দলের মাধ্যমে সেগুলি পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে একটি বা দুইটি দল ধরা পড়ে গেলেও বাকি জাল টাকা সফলভাবে পাচার করা সম্ভব হবে বলেই পাচারকারীরা মনে করছে। এতে তাদের লাভ কম হলে ক্ষতির আশঙ্কাও অনেকটাই কমে যায়। তাই এই পরিবর্তন।
সম্প্রতি বৈষ্ণবনগরে লক্ষাধিক টাকার সামান্য বেশি জাল ভারতীয় নোট সহ দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করে বিএসএফ। পরে তাদের পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গাজোল থেকে দু’জন ও ইংলিশবাজার থেকে এক ব্যক্তিকে জাল নোট পাচারের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিস। এদের মধ্যে একজন ঝাড়খণ্ডের ও বাকি দু’জন কালিয়াচক থানা এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। তবে এই তিনজনের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া জাল নোটের অঙ্ক আড়াই লক্ষ টাকার খানিকটা কম। সাম্প্রতিক অতীতে মোথাবাড়ি, বৈষ্ণবনগর থানার বিভিন্ন এলাকাতেও কম অঙ্কের হলেও একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে জাল নোট উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে।
এই কম অঙ্কের জাল নোট পরপর উদ্ধার হতে থাকাতেই টনক নড়েছে পুলিসের। পুলিস সুপার বলেন, আমরাও সময়ের নিয়মে আমাদের অভিযান পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছি। কী ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে তা নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি পুলিস সুপার। তবে জেলার ক্রাইম ব্রাঞ্চের ওই আধিকারিক বলেন, আমরা খুব নিচুতলা পর্যন্ত সোর্স ছড়িয়ে দিয়েছি। ফলে সামান্য পরিমাণ জাল নোট পাচারের চেষ্টা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমাদের কাছে খবর চলে আসছে। এই নেটওয়ার্ক নির্দিষ্ট কিছু পদ্ধতিতে আরও বিস্তৃত করার চেষ্টা চলছে।