পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এদিন সকাল থেকেই শিলিগুড়ির আকাশ ছিল মেঘলা। সূর্যের দেখা মেলেনি বললেই চলে। দিনভর ছিল কনকনে ঠান্ডা হাওয়া। তা সত্ত্বেও দুপুরের মধ্যে আঠারোখাই খেলার ময়দান কানায় কানায় ভরে যায়। স্কুলের পোশাক পরে ছাত্রছাত্রীরা যেমন মাঠে জমায়েত হয়, তেমনি ধামসা, মাদল, দোতারা, নিয়ে উৎসবস্থলে হাজির হন শিল্পীরা। ছিলেন আম জনতাও। দুপুর থেকেই উৎসবস্থলে নাচ, গান, নাটক শুরু হয়। কোনও দল নাবালিকা বিয়ে ও নারী নির্যাতন রোধের বার্তা নিয়ে, আবার কোনও দল স্থানীয় লোকসংস্কৃতির উপর নৃত্য ও নাটক মঞ্চস্থ করে। তাদের অধিকাংশই ছিল ছাত্রছাত্রী। এভাবেই দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়।
ঠিক বিকাল ৩টা ৮ মিনিট নাগাদ উৎসবস্থলে প্রবেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনি,করতালি দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান উৎসবস্থলে উপস্থিত দর্শকরা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার আসার পরই উত্তরবঙ্গ উৎসবের সূচনা করা হয়। এখানে যেমন উত্তরবঙ্গ উৎসব হচ্ছে, তেমনি উত্তরবঙ্গে আটটি জেলায় একই সঙ্গে এই উৎসব হচ্ছে। এই উৎসবে উপস্থিত সব ছাত্রছাত্রীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাই। তোমরা ভালো থেকো। শিক্ষকদের প্রণাম জানাই। সঙ্গে সঙ্গে হাততালি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে উৎসব ময়দানে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীরা।
এদিন উত্তরবঙ্গের মিনি সচিবালয় ‘উত্তরকন্যার’ জন্মদিন। সেই প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তরবঙ্গবাসীর দীর্ঘদিনের বাসনা ছিল- এখানে রাজ্য সরকারের সচিবালয় গড়ার। আমাদের সরকার আসার পর সেই বাসনাও পূরণ হয়েছে। আমরা উত্তরকন্যা তৈরি করেছি। আজকে উত্তরকন্যার জন্মদিন। উত্তরকন্যাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এটা উত্তরবঙ্গবাসীর কাছে প্রাণের আরাধনা, উপাসনার বিষয়। সত্যি উত্তরবঙ্গ অবহেলিত ছিল। আজেক ছ’টি জেলার জায়গায় আটটি জেলা তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে নতুন কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ, বেঙ্গল সেফারি, জয়ী সেতু, ভোরের আলো করা করা হচ্ছে। নিউ ময়নাগুড়ি-যোগীঘোপা রেললাইন, চ্যারাবান্ধা-মালবাজার রেল লাইনও আমাদের সময় করা। উত্তরবঙ্গ জুড়ে ঢেলে উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। ইতিমধ্যে কোচবিহারে বিমানবন্দর করা হয়েছে। বাগডোগরা বিমানবন্দর বাড়ানো হচ্ছে। সেখানে নাইট ল্যান্ডিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বালুরঘাট ও মালদহে নতুন দু’টি বিমানবন্দর করা হচ্ছে।
পাশাপাশি, রাজবংশী, ভাওয়াইয়া, গম্ভীরা সহ উত্তরবঙ্গের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির কথা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আলিপুরদুয়ার ও কালিম্পং নতুন জেলা হয়েছে। মিরিককে মহকুমা করা হয়েছে। মালদহকে নতুন ডিভিশন করা হয়েছে। শিলিগুড়িতে পুলিস কমিশনারেট করা হয়েছে। চা বাগানেও প্রচুর কাজ করা হচ্ছে। রায়গঞ্জ, কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করা হচ্ছে। বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর, চাঁচল সহ বেশকিছু জায়গায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। এভাবে প্রচুর কাজ করা হচ্ছে। যাতে বাঙালি, নমঃশূদ্র, সংখ্যালঘু, অবাঙালি, তফসিলি সহ সমস্ত ভাই বোনেরা মর্যাদা পান। করতালি দিয়ে তাঁকে সমর্থন জানান দর্শকরা।
সবশেষে মঞ্চে কচিকাঁচাদের ডেকে নেন মুখ্যমন্ত্রী। তখন গান ধরেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। কচিকাঁচাদের হাত ধরে মুখ্যমন্ত্রীও গানের সঙ্গে গলা মেলান।