পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
উল্লেখ্য, ১৭ জানুয়ারি মালদহের দু’টি পুরসভার সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশিত হয়। ইংলিশবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান, এক প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও আরও দুয়েকজন কাউন্সিলার সংরক্ষণের কোপে পড়ে নিজেদের বর্তমান ওয়ার্ড থেকে দাঁড়াতে পারছেন না। একই সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে বিরোধী শিবিরেও। বিজেপির দুই কাউন্সিলার ও সিপিএমের এক কাউন্সিলারের ওয়ার্ডগুলিও সংরক্ষণের আওতায় এসেছে। এই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
২০১৫ সালে ইংলিশবাজার পুরসভার ২৯টি ওয়ার্ডের ১৫টি আসনে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। নিজস্ব সাতজন ও সমর্থিত দু’জন নির্দল প্রার্থী ধরে বামেরা পেয়েছিল নয়টি আসন। বিজেপি দখল করেছিল তিনটি আসন। বাকি দুইটি আসন গিয়েছিল কংগ্রেসের ভাঁড়ারে। পরবর্তীকালে, দুই সমর্থিত নির্দল সহ সাত বাম কাউন্সিলার যোগে দেন তৃণমূলে। বিজেপির একজন ও কংগ্রেসের দুই কাউন্সিলারও দল ছেড়ে তৃণমূলে চলে যান। ফলে এই মুহূর্তে বিজেপির হাতে রয়েছে দু’জন কাউন্সিলার। সিপিএমের হাতে খাতায়কলমে দুইজন কাউন্সিলার থাকলেও একজন কার্যত দলের সঙ্গে যোগাযোগ না রেখে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলেই দাবি সিপিএম নেতৃত্বের। সবেধন নীলমণি একজনই সক্রিয় সিপিএম কাউন্সিলার রয়েছেন ইংলিশবাজার পুরসভায়। সংরক্ষণের গেরোয় বিজেপির ওই দু’টি আসন এবং সিপিএমের সেই একটি আসন মহিলাদের (সাধারণ) জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। এতেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছে বিরোধীরা।
ইংলিশবাজার পুরসভার নয় নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলার সঞ্জয় শর্মা বলেন, ইতিমধ্যেই জেলাশাসকের কাছে সংরক্ষণের ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। তিনদিনের মধ্যে স্পষ্ট উত্তর না পেলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব। তারজন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গিয়েছে। এক নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলার রাজীব চম্পটি বলেন, পুরোপুরি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত এই সংরক্ষণ তালিকা। আইনের পথে এই সংরক্ষণ তালিকার বিরুদ্ধে লড়াই করা হবে।
বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডলের দাবি, নিয়মের অপব্যাখ্যা করে এই সংরক্ষণ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। রাজ্যের এক উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিক আমাদের এই তালিকার ভ্রান্তি গোপনে ধরিয়ে দিয়েছেন। আমরা আইনি পদ্ধতিতে এই তালিকাকে চ্যালেঞ্জ করতে চলেছি। নির্বাচন শুরুর আগে থেকেই খেলা শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু তাতে সুবিধা হবে না।
এদিকে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলার দোলন চাকি বলেন, বিষয়টি নিয়ে দল উদ্যোগ নিচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, তালিকা প্রকাশের প্রাক মুহূর্তে একটি সর্বদলীয় বৈঠক করেছে জেলা প্রশাসন। এই বৈঠক আগেই করা উচিত ছিল। এই সংরক্ষণ তালিকা নিয়ে সন্দেহের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে। কীসের ভিত্তিতে এই সংরক্ষণ তালিকা তৈরি হয়েছে আমরা তা জানতে চাই। প্রয়োজনে রাজনৈতিক ও আইনি লড়াইয়ের পথ খোলা থাকছে।
তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুর অবশ্য বিরোধীদের এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, পায়ের তলায় মাটি নেই বুঝেই ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন বিরোধীরা। তৃণমূলের চেয়ারম্যান, প্রাক্তন চেয়ারম্যান সহ অনেকেই এই সংরক্ষণ তালিকার জেরে নিজেদের ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারছেন না। এতেই প্রমাণিত যে তৃণমূল কোনও ভাবেই এই তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে প্রভাব খাটায়নি।
জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে এক শীর্ষ প্রশাসনিক আধিকারিক বলেন, নিয়ম মেনেই তালিকা তৈরি হয়েছে।