উচ্চবিদ্যায় ভালো ফল হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে সুযোগ আসবে। কোনও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিতে পারলেও তাঁরা এদিন রাজবাড়িতে প্রবেশ করতে পারেননি। ভবানীকুমারিদেবী এর আগেও একবার শহরে এসেছিলেন। সেবারও রাজবাড়ি বন্ধ থাকার কারণে ভিতরে ঢুকতে পারেননি। প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাজবাড়ি বন্ধ থাকে। তবে তাঁরা মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়ে, সুনীতি অ্যাকাডেমি ঘুরে দেখেছেন। উত্তরাদেবীর ছোটবেলা রাজবাড়িতেই কেটেছে। বৃহস্পতিবার রাতে এসে তাঁরা কোচবিহার সার্কিট হাউসে ওঠেন। আজ, শনিবার সকালে তাঁদের কোচবিহার থেকে চলে যাওয়ার কথা।
এদিন উত্তরাদেবী বলেন, ২১ বছর বয়সে আমি কোচবিহার ছেড়ে যাই। এখন আমার বয়স ৭৭। ভাইয়ের বিয়েতে, মহারাজের মৃত্যুর সময়ে এখানে এসেছিলাম। চারবছর আগেও একবার এখানে এসেছিলাম। এদিন স্মৃতি হাতড়ে উত্তরাদেবী বলেন, আমার প্রথম পড়াশুনা রাজ প্রাসাদেই হয়েছিল। সেখানেই শিক্ষক আসতেন। পরে দার্জিলিং, চেন্নাইতে পড়াশুনা করেছি। বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়ে বৃহস্পতিবার এখানে এসেছি। এদিন রাজবাড়ি বন্ধ ছিল। তাই যেতে পারিনি। মেয়েকে রাজবাড়ির ভিতরটা দেখাতে পারলাম না। শনিবার কলকাতায় ফিরে যাব।
ভবানীকুমারি বলেন, আমি আগে একবার বাইরে থেকে রাজবাড়ি দেখেছি। মনে হয় সেইদিনও শুক্রবার ছিল। ভিতরে কখনও ঢুকিনি। পরে আবার আসব। সুনীতি অ্যাকডেমি দেখে খুব ভালো লাগল।
নিরুপমবাবু বলেন, কোচবিহারের রাজ পরিবার নিয়ে আমার আগ্রহ রয়েছে। সেই সূত্রেই গায়ত্রীদেবীর সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। আমি তাঁকে একসময়ে বলেছিলাম যে, আপনার পরে আর সেভাবে কেউ থাকবে না। তিনি আমায় বলেছিলেন, কেন? উত্তরা রয়েছে। এরপরেই আমি উত্তরাদেবীর খোঁজ শুরু করি। ২০১৩ সালে আমি তাঁর খোঁজ পাই। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়। সেই থেকেই আমার সঙ্গে ওঁর যোগাযোগ রয়েছে। সেই সূত্র ধরেই আমার মেয়ের বিয়েতে আমি উত্তরাদেবীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তিনি এবং তাঁর মেয়ে আমার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে এখানে এসেছেন। এদিন তাঁরা মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেন।
কোচবিহারের শেষ মহারাজা জগদীপেন্দ্র নারায়ণের ভাইঝি ও ইন্দ্রজিৎ নারায়ণের মেয়ে উত্তরাদেবী। তাঁর মেয়ে ভবানীকুমারিদেবী। একসময়ে কোচবিহারের মহারাজাদের ঐতিহ্য, জাঁকজমক সব কিছুই ছিল। তাঁদের স্থাপত্য, রাজ্যশাসনের নানা নির্দশন আজও কোচবিহার শহরে যত্রতত্র ছড়িয়ে রয়েছে। কোচবিহার রাজবাড়ি, মদনমোহন মন্দির আজও কোচবিহার রাজ পরিবারের ঐতিহ্য বহন করছে। বর্তমানে রাজবাড়িতে কেউ থাকেন না। এই শহরেও রাজ পরিবারের কেউ থাকেন না। উত্তরাদেবী বহু আগেই কোচবিহার থেকে পড়াশুনা ও বিবাহ সূত্রে বাইরে চলে যান। কিন্তু শেকড়ের টান ও নিজের শহরের পরিচিত ব্যক্তির আমন্ত্রণ রক্ষা করতেই ঘুরে গেলেন কোচবিহার।