কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
উল্লেখ্য, বাম-কংগ্রেসের বন্ধকে কেন্দ্র করে সুজাপুর রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। পুলিসকে লক্ষ্য করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ইটপাটকেল, কাচের বোতল ছোঁড়ে। যথেচ্ছ ভাঙচুরের পর পুলিস আধিকারিকদের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিস কর্মী ও আধিকারিক জখম হন। পাল্টা সুজাপুরের নয় মৌজার মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক গাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে পুলিসের একাংশের বিরুদ্ধে। ওই সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হতেই রাজ্য সরকার নড়েচড়ে বসে। ঘটনার তদন্তভার সিআইডিকে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে পুলিসের উপর আক্রমণের মামলার তদন্তভারও সিআইডির হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এদিকে সুজাপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে এবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার প্রস্তাব দিল জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র ও পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়ার সঙ্গে দেখা করে এই আর্জি জানান জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৌসম নুর। একই সঙ্গে মৌসম বলেন, সুজাপুর কাণ্ড নিয়ে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও একটি রিপোর্ট জমা দেব।
এদিন সকাল ১১টা নাগাদ প্রথমে জেলাশাসক ও পরে পুলিস সুপারের অফিসে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে সুজাপুরের ঘটনা ও তার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন মৌসম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ইংলিশবাজার পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার, কাউন্সিলার তথা যুবনেতা অম্লান ভাদুড়ি, জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল এবং তৃণমূল নেতা হেমন্ত শর্মা।
পরে মৌসম বলেন, সুজাপুরের ঘটনাটি নিয়ে মানুষের মনে এখন অস্থিরতা রয়েছে। পুলিস ঘটনায় যুক্তদের খোঁজে বিভিন্ন গ্রামে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। আমরা দাবি করেছি, নিরীহ কোনও বাসিন্দাকে যেন হয়রান না করা হয়। অবিলম্বে একটা শান্তি বৈঠক হওয়া উচিত বলে তৃণমূল মনে করছে। ওই বৈঠকে সব রাজনৈতিক দলকেই আমন্ত্রণ করা যেতে পারে। পাশাপাশি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের স্থানীয় নেতৃত্বও ওই বৈঠকে থাকলে প্রশাসন ও পুলিস আধিকারিকদের সঙ্গে তাঁরা খোলা মনে আলোচনা করতে পারবেন। এই শান্তি বৈঠক কালিয়াচক থানার অধীন সুজাপুর সংলগ্ন কোনও জায়গাতে হওয়াই শ্রেয়।
একই সঙ্গে মৌসম নুর বলেন, রাজ্য সরকার সক্রিয় বলেই সুজাপুরের ঘটনার জল বেশি দূর গড়ায়নি। পৃথকভাবে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ নেওয়া হয়েছে।
এদিকে সুজাপুরের ঘটনা নিয়ে মৌসম নুরের দেওয়া সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও তাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের জেলা নেতৃত্ব। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক মোস্তাক আলম বলেন, তৃণমূল একদিকে বন্ধের দিন আমাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, আবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকারও প্রস্তাব দিচ্ছে। দু’টি পরস্পরবিরোধী। তবে সুজাপুরে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সর্বদলীয় বৈঠকে যেতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।
প্রায় একই সুরে কথা বলেন জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র। তিনি বলেন, সর্বদলীয় শান্তি বৈঠকের প্রস্তাব তৃণমূল তো অনেক পরে দিল। আমরা কংগ্রেসের সঙ্গে যৌথভাবে গিয়ে ১০ জানুয়ারি পুলিস সুপারের কাছে এই সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব দিয়ে এসেছি।
জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। প্রস্তাবটি বিবেচনা করে এবং পুলিস সুপারের সঙ্গে আলোচনা করেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।