পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
শুক্রবার নির্দিষ্ট সময়ে লাগেজ নিয়ে এনজেপি স্টেশনে গিয়ে ট্রেন যাত্রীরা দিশাহারা হয়ে পড়েন। তাঁদের অনেকেই কিছু বুঝে উঠতে না পেরে ফিরে যান। আবার অনেকে একাধিক ট্রেন বদল করে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য স্টেশনেই বসে ছিলেন। সবমিলিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন এনজেপি। স্বাভাবিকভাবে এই স্টেশনের উপর শিলিগুড়ি সহ আশপাশ এলাকার বাসিন্দারা নির্ভরশীল। এদিন ট্রেন ধরার জন্য প্রচুর যাত্রী স্টেশনে যান। কিন্তু ট্রেন বাতিল হওয়ায় তাঁরা নাকাল হন। তাঁদের কেউ স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের বাইরে করিডরে কাগজ পেতে, আবার কেউ চাদর বিছিয়ে বসেছিলেন।
শিলিগুড়ির ভক্তিনগরের বাসিন্দা গদা সরকার বলেন, মাসতুতো দাদার চিকিৎসা করাতে ভেলোর যাব। এজন্য মাস খানেক আগে ট্রেনের টিকিট কেটেছি। এদিন ২টা ১৫মিনিট নাগাদ এখান থেকে ট্রেন চাপার কথা ছিল। একাধিক লাগেজ সহ মাসি, দাদা এবং দুই বোনকে নিয়ে এখানে এসে শুনি ট্রেন বাতিল হয়ে গিয়েছে। এখন কী করব, তা বুঝতে পারছি না। তাই বসে আছি। ওই ট্রেনেরই আরএক যাত্রী সমর দাসের বাড়ি জলপাইগুড়ি জেলায়। তিনি বলেন, ওই ট্রেনে আমার যাওয়ার কথা ছিল। এখনে এসে শুনছি ট্রেন বাতিল হয়ে গিয়েছে। তাই অন্য ট্রেনে হাওড়া যাওয়ার জন্য বসে আছি। ট্রেনের কয়েকজন যাত্রী বলেন, ট্রেন বাতিল তাই এখন বাসে কলকাতায় যাব ভাবছি। কয়েকজন আবার বলেন, ট্রেন বাতিল হওয়ায় আবার বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।
এদিন দুপুরে এনজেপি স্টেশনের ১ এ নম্বর প্ল্যাটফর্মে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল চণ্ডীগড়-ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস। এই ট্রেনের যাত্রীদের চোখেমুখে ছিল বিরক্তির ছাপ। তাঁরা বলেন,অনেকক্ষণ ধরে এখানে ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে। খাবারের সমস্যা না হলেও এভাবে স্টেশনে থাকতে আর ভালো লাগছে না। সোনালি বড়ুয়া নামে এক মহিলা বলেন, অসমে যাব। মেয়েকে নিয়ে এভাবে আর কামরায় বসে থাকতে পারছি না।
চরম যাত্রী দুর্ভোগ দেখা গেল নিউ আলিপুরদুয়ার জংশন স্টেশনেও। আপ শিয়ালদহ-আগরতলা কাঞ্চনজঙ্খা এক্সপ্রেসকে বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে নিউ আলিপুরদুয়ার জংশন স্টেশনেই দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনটির কয়েকশো যাত্রী বৃহস্পতিবার মধ্য রাত থেকে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ত্রিপুরার আমবাসার বাসিন্দা স্বপ্না দেবনাথ বৃন্দাবন ঘুরে শিয়ালদহ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। বৃদ্ধা স্বপ্নাদেবী বলেন, মাঝরাতে নিউ আলিপুরদুয়ারে এসে ট্রেন থেমে গেল। এখন কী করে বাড়ি ফিরব বুঝতে পারছি না। ত্রিপুরার কুমারঘাটে বাড়ি ফেরার জন্য বেঙ্গালুরু থেকে শিয়ালদহে এসে কাঞ্চনজঙ্ঘা ধরেছিলেন যুবক হিমাংশু মালাকার। তাঁরও প্রশ্ন, এখন বাড়ি ফিরব কীভাবে?
ত্রিপুরার আমবাসার বাসিন্দা অশীতিপর বৃদ্ধ অজিত ভট্টাচার্য বলেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রচণ্ড ঠান্ডায় স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে পড়ে আছি। টাকা পয়সাও শেষ হয়ে আসছে। কবে বাড় যেতে পারব বুঝতে পারছি না। নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সুনীল দত্ত অবশ্য বলেন, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশের অপেক্ষায় আছি। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের যাত্রীদের খাওয়া থাকার সব ব্যবস্থাই করা হয়েছে।
যদিও পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা জানা নেই রেল কর্তৃপক্ষেরও। অসমের মালিগাঁও থেকে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে বলা মুশকিল। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।