পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বড়দিন ও বর্ষবরণ উপলক্ষে আলো ঝলমলে হয়ে ওঠে ইংলিশবাজার শহর। অন্তত গত দু’বছর ধরে শীতের কার্নিভালে এমন দৃশ্যই দেখতে অভ্যস্ত জেলা সদরের বাসিন্দারা। শহরের বাসিন্দাদের পাশাপাশি সন্ধ্যা নামতেই আলোয় মুড়ে থাকা শহরের উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকতে সংলগ্ন গ্রামীণ এলাকা থেকেও আসেন অনেকেই। তবে তৃতীয় বছরে এসে এই কার্নিভ্যালই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ইংলিশবাজারে। কার্নিভ্যাল আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে কোনও স্পষ্ট মন্তব্য করেনি ইংলিশবাজার পুর কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে আলোর এই উৎসব নিয়ে অন্ধকারে পুরসভার পাশাপাশি ইংলিশবাজারের বাসিন্দারাও।
ইংলিশবাজার পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার বলেন, গত দু’বছর ধরে আমরা কার্নিভ্যালের আয়োজন করে আসছি। মানুষের সাড়াও পেয়েছি। ২০১৮ সালে পুরসভার সার্ধ শতবর্ষ উপলক্ষ্যে কার্নিভ্যালের জন্য চোখ ধাঁধানো উৎসবের আয়োজন করেছিলাম আমরা। পুরসভার পাশাপাশি বেসরকারি মহলের তরফেও অনেকটাই আর্থিক সাহায্য পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এবার কার্নিভ্যালের জন্য গত বছরের মতো বিপুল খরচ করা পুরসভার পক্ষে সম্ভব নয়। ইচ্ছা থাকলেও সব সময় উপায় হয় না। আমরা শনিবারে চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের সদস্যদের নিয়ে প্রাথমিকভাবে একটা বৈঠক করার কথা ভেবেছি। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এব্যাপারে। সেই বৈঠকের আগে পর্যন্ত কী করে বলি যে কার্নিভ্যাল হচ্ছে? বলতে গেলে এবছরের কার্নিভ্যাল এখনও পর্যন্ত অনিশ্চিতই।
একটু ঘুরিয়ে প্রায় একই কথা শোনা গিয়েছে ইংলিশবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান নীহার ঘোষের মুখেও। তিনি বলেন, বৈঠক না হলে কিছুই বলা উচিত হবে না। অনেকেই কার্নিভ্যাল নিয়ে প্রশ্ন করছেন। আগ্রহ প্রকাশ করছেন। কিন্তু এই উৎসবের জন্য যে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন, তা পুরসভার পক্ষে এককভাবে খরচ করা এবার সম্ভব নাও হতে পারে। বেসরকারি কিছু আর্থিক সাহায্য ও রাজ্য সরকারের সব রকম সহায়তা আমরা পেয়ে থাকি। এখনই বলছি না যে এ বছরের কার্নিভ্যাল হবে না। কিন্তু সব মহলের সাহায্য না পেলে এবার কার্নিভ্যাল করা কঠিন।
ইংলিশবাজার পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কার্নিভ্যালের মূল খরচ আসে পুরসভার তহবিল থেকেই। কিছু বেসরকারি সাহায্যও পাওয়া যায়। রাজ্য সরকারের তরফেও খানিকটা সাহায্য আসে। তবে শুধু পুরসভার ভাঁড়ার থেকেই ১৪ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা কার্নিভালের জন্য খরচ হয়ে থাকে। এরমধ্যে আলোকসজ্জা, মঞ্চ তৈরি, ধ্বনি প্রক্ষেপণ ব্যবস্থা ও বহিরাগত শিল্পীদের মালদহে আসা ও কলকাতা ফেরার খরচ সহ তাঁদের পারিশ্রমিক ধরা থাকে। এর আগে মালদহে বড়দিন উপলক্ষ্যে এই ধরণের অনুষ্ঠান হতো না। ২০১৭ সালে নীহার ঘোষ পুরসভার চেয়ারম্যান হয়ে এই অনুষ্ঠান চালু করেছিলেন। প্রথমবার এই কার্নিভ্যাল নিয়ে কারোরই স্পষ্ট ধারণা ছিল না। সেই উৎসবের জন্য যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ সহ বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে নাগরিক সমাজের একাংশ তা নিয়ে বেশ খানিকটা অসন্তোষও প্রকাশ করেছিলেন। আবার সাত দিন ধরে এই কার্নিভ্যাল চালানোর যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন কেউ কেউ। তবে আবার এই কার্নিভ্যাল নিয়ে উৎসাহীর সংখ্যাও কম নয়। বিশেষত কচিকাঁচাদের মধ্যে তুমুল উৎসাহ থাকে।
তবে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শেষ পর্যন্ত কার্নিভাল হলেও সাত দিনের পরিবর্তে তার মেয়াদ কমিয়ে দু’-তিন দিনের মধ্যে সেরে ফেলা হতে পারে।