বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
উল্লেখ্য, ৯ থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মালদহের ১৫টি ব্লকেই এনআরসি বিরোধী রিলে মিছিল করে তৃণমূল। প্রতিটি ব্লকে মৌসম নিজেই যান। তাঁর পাখির চোখ ছিল এদিনের জেলা সমাবেশ। এই সমাবেশে সমর্থক ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি যে তাঁদের প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে তা অকপটে স্বীকার করেছেন মৌসম সহ তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতানেত্রীরা। এই সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ, সাবিনা ইয়াসমিন, সমর মুখোপাধ্যায়, দীপালি বিশ্বাস, প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী, সাবিত্রী মিত্র, সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল প্রমুখ।
এদিনের সমাবেশের প্রধান বক্তা ছিলেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। সমাবেশে জনসমাগম দেখে অভিভূত মন্ত্রী বলেন, এনআরসি ও ক্যাব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে আন্দোলন শুরু করেছেন, তা দেশের ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম’ বলে পরিচিত হয়েছে মানুষের মধ্যে। গায়ের জোরে ক্যাব পাশ করিয়ে দেশের নাগরিকদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা তৈরির অপপ্রয়াস করছে বিজেপি। সারা দেশে, বিশেষত উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে চরম অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। সেনা নামাতে হচ্ছে। উত্তর-পূর্বগামী একের পর এক ট্রেন হয় বাতিল হচ্ছে, তা না হলে কোথাও না কোথাও অনির্দিষ্টকালের জন্য থমকে রয়েছে। আতঙ্ক তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে।
গৌতমবাবু বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমি ১৪ তারিখ আলিপুরদুয়ার যাব। সাধারণ নাগরিক ও দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলব। কোচবিহার যাওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে। চরম সমস্যায় থাকা রেল যাত্রীদের জন্য যা যা সাহায্য করার প্রয়োজন, তা আমরা করার চেষ্টা করছি। প্রয়োজনে শিবির করে তাঁদের সাহায্য করব আর সেসব শিবির থেকে বোঝাব এনআরসি ও ক্যাব করে কীভাবে বিজেপি দেশের সর্বনাশ করছে। আমাদের দলের নেতাকর্মীরা উত্তরবঙ্গজুড়ে আন্দোলনের মধ্যে থাকবেন। এনআরসি ও ক্যাব রুখতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
এদিনের সমাবেশে জেলা তৃণমূলের ঐক্যবদ্ধ ছবি তুলে ধরতে সফল মৌসম নুর। দলের সব গোষ্ঠীর নেতানেত্রীদের এদিন এক মঞ্চে দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন ব্লক থেকে সকাল থেকেই মিছিল আসতে শুরু করে জেলা কালেক্টরেট সংলগ্ন এলাকায়। বেলা সাড়ে ১২টার মধ্যেই সমাবেশ স্থল কার্যত ভর্তি হয়ে যায়।
মানুষের এই ভিড় দেখে এদিন আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন মৌসম। তিনি বলেন, মানুষ যে এনআরসি ও ক্যাবের বিরুদ্ধে জোট বাঁধছেন, আজকের সমাবেশই তার প্রমাণ। এই সাফল্যকেই পাথেয় করে আগামীতে জেলাজুড়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও জানিয়ে দেন তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী।
এদিনের সমাবেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় অংশ নিয়েছিলেন আদিবাসী নাগরিকরাও।
তবে তৃণমূলের এই সমাবেশকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপি’র জেলা সহ সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, প্রশাসনের নাকের ডগায় আইন ভেঙে সাইলেন্স জোনে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে প্রকাশ্য সমাবেশ করল তৃণমূল। মন্ত্রী থেকে সভাধিপতি সবাই হাজির থেকে আইন ভাঙলেন। এরপরে ওঁদের মুখে আইনের কথা মানায় না। জেলা বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, একই জায়গায় এবার তৃণমূলের সমাবেশের পাল্টা সমাবেশ করে এনআরসি ও ক্যাবের পক্ষে জনমত তৈরি করার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরের তরফে।