কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
নভেম্বরের শেষ থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত—শীতের এই কয়েক মাস ধরে দুই শহরের রাস্তায় প্রতিদিন ভাপা পিঠে তৈরি করে বিক্রি করেন পিঠে বিক্রেতারা। অল্প দামে এমন সুস্বাদু খাদ্যের টান সহজে অস্বীকার করার উপায় থাকে না, জানালেন খাদ্যরসিকরা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির এই জমানায় যখন সব জিনিসের দামই দিনকে দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তখন ভাপা পিঠের দাম কিন্তু বাড়েনি। গত বছরের দামেই এবছরও বিক্রি হচ্ছে ভাপা পিঠে। পিঠে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এবারে শুধু নলেন গুড় দিয়ে এক পিস ভাপা পিঠের দাম ৫ টাকা। নারকেল কুচির সঙ্গে নলেন গুড় মিশিয়ে যদি পুর দেওয়া হয় তবে সেই ভাপা পিঠের দাম দশ টাকা। গ্যাসের উনুনে বা স্টোভে জল ভর্তি হাড়ি বসিয়ে তার ঢাকনিতে ছিদ্র করা হয়। জল ফুটে বাষ্প বেরোলে তার ভাপে চালের গুঁড়ো সেদ্ধ করে ভাপা পিঠে তৈরি করা হয়। ভাপা পিঠে বিক্রেতারা প্রতিদিন শহরে প্রায় দুই থেকে তিনশো’ ভাপা পিঠে বিক্রি করেন।
অপরদিকে, বুনিয়াদপুর শহরের বাস স্ট্যান্ড এলাকায় একাধিক অস্থায়ী দোকান লাগিয়ে বিক্রি হচ্ছে ভাপা পিঠে। শীত পড়তেই বিকেল থেকে রাত্রি পর্যন্ত শহরে ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে ভাপা পিঠে। বুনিয়াদপুর শহরেও একই ভাবে ৫ টাকা ও ১০ টাকা দামের ভাপা পিঠে বিক্রি হচ্ছে। ওই বাস স্ট্যান্ডে দূরপাল্লার বেশ কিছু বাস দীর্ঘক্ষণ ধরে স্টপেজ দেয়। সেসব বাসের যাত্রীদের অনেকেই কেউ কেউ খাচ্ছেন ভাপা পিঠে। আবার বাস স্ট্যান্ড থেকে ভাপা পিঠে কিনে নিয়েও যাচ্ছেন অনেকে।
গঙ্গারামপুর শহরের ভাপা পিঠে বিক্রেতা ভক্ত হালদার বলেন, শীত পড়তেই এবছরও গঙ্গারামপুর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় ভাপা পিঠের দোকান দিয়েছি। খুব সামান্য লাভে ভাপা পিঠে বিক্রি করছি। শহরে এখন ভাপা পিঠের দোকানের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ভোজনরসিকদের গত বছরের দামেই ভাপা পিঠে খাওয়াচ্ছি। প্রায় পাঁচ বছর ধরে শীত পড়তেই ভাপা পিঠের দোকান দিচ্ছি। শীতের তিন মাস এই ব্যবসা করব। এখনও অবধি ভালোই ব্যবসা হয়েছে। অনেকেই খেয়ে আবার বাড়ির জন্যও ভাপা পিঠে নিয়ে যান। আবার অনেক সময় সামাজিক অনুষ্ঠানেও অর্ডার পাই। আতপ চাল ভাঙিয়ে ভাপা পিঠে তৈরি করতে হয়। সেইসঙ্গে ভালো মানের নলেন গুড় দিতে হয়। তবেই পিঠের স্বাদ খোলে।
বুনিয়াদপুর শহরের ভাপা পিঠে বিক্রেতা অসীম রায় বলেন, আমি কয়েক বছর ধরে বুনিয়াদপুর শহরের বাস স্ট্যান্ড এলাকা ও কোর্ট মোড় এলাকায় ভাপা পিঠে বিক্রি করছি। নতুন আতপ চাল মেশিনে ভাঙিয়ে গুঁড়ো করে ভাপা পিঠে তৈরি করি। নারকেল ও নলেন গুড় দিয়ে পুর বানাই। বুনিয়াদপুর বাস স্ট্যান্ডে শিলিগুড়ি ও কলকাতার দূরপাল্লার বাসের স্টপেজ হয় দীর্ঘক্ষণ ধরে। বাসের যাত্রীরা আমার ভাপা পিঠে কেনেন। প্রতিদিন রাত্রি ১০টা পর্যন্ত ব্যবসা করি।
ভোজনরসিক উত্তম রায় বলেন, আমি স্কুল শিক্ষক। বাড়ি জেলার পতিরাম এলাকায়। স্কুল থেকে ফেরার পর বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে গরম গরম ভাপা পিঠে দিয়ে টিফিন করি। খুব সস্তার টিফিন। আবার পেটও ভরে। কোনও কোনও দিন পরিবারের জন্য নিয়ে যাই। ভাপা পিঠে খেতে পারব এইজন্যই প্রতিবার শীতের জন্য অপেক্ষা করি।