গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
বাজারে প্রতিদিনের মতো মাছ-সব্জি কিনতে গিয়ে মালদহের বাসিন্দারা একে অপরকে জিজ্ঞেস করছেন, এবার কী কী নথিপত্র লাগবে। আবার কেউ জিজ্ঞেস করছেন, কবে থেকে চালু হতে পারে এই ক্যাব। অসংখ্য প্রশ্ন সকলেরই মুখে ও মনে। যাঁরা বিষয়টি নিয়ে সম্যকভাবে অবগত নন তাঁরা আবার অন্যদের কথা শুনে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছেন আসলে ক্যাব কী।
পেশায় স্কুল শিক্ষক উজ্জ্বল বসাক বলেন, আমাদের সহকর্মীদের মধ্যে পরীক্ষা শেষে আলোচনা চলছে শুধুই ক্যাব নিয়ে। কেউ পিতৃপুরুষের নাম কীভাবে ঠিক করা যাবে তা জানতে চাইছেন, আবার কেউ ছুটছেন আধার কার্ডের তথ্য সংশোধন করতে। আসলে সকলের মধ্যেই চাপা আতঙ্ক, এই বুঝি দেশ ছাড়তে হয়।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক মালদহ শহরের এক প্রথিতযশা শল্য চিকিৎসক বলেন, আসলে পুরো বিষয়টা প্রবল ধোঁয়াশায় ঘেরা। কী হবে, কবে থেকে হবে, নাগরিকত্ব বজায় রাখতে গেলে কী কী করতে হবে কেউই বোধহয় স্পষ্ট করে জানেন না। তাই বিভিন্ন ভুলে ভরা আলোচনায় বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। আশঙ্কার পারদও চড়ছে আম আদমির মধ্যে।
পরিস্থিতি নিয়ে যে আম জনতা চরম উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন, তা স্বীকার করেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র। তিনি বলেন, বিজেপি’র অনেক নেতাই অশিক্ষিতের মতো আচরণ করছেন। মুখে এনআরসি, ক্যাব ইত্যাদি বলছেন, অথচ দেশবাসীর হৃদয়ের ভাষা তাঁরা পড়তে পারেন না। সিপিএম জেলা সম্পাদকের দাবি, আমরা ইতিমধ্যেই রাস্তায় নেমে পড়েছি ক্যাবের বিরোধিতায়। কারণ তৃণমূলের ক্যাব বা এনআরসি বিরোধিতা আসলে লোক দেখানো। আসলে তৃণমূল ও বিজেপি’র মধ্যে গভীর ও গোপন সখ্যতা যে রয়েছে, তা দিনের আলোর মতই পরিস্কার।
অন্যদিকে তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুর বর্তমানে ব্যস্ত জেলায় দলের এনআরসি বিরোধী আন্দোলন নিয়ে। তিনি বলেন, মালদহে আন্তর্জাতিক, আন্তঃরাজ্য ও আন্তজেলা সীমান্ত রয়েছে। ফলে তীব্র আতঙ্কে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। ক্যাব নিয়ে মানুষকে আশ্বস্ত করার পাশাপাশি আমরা তীব্র আন্দোলন শুরু করব জেলাজুড়ে। সিপিএমের সমালোচনা প্রসঙ্গে মৌসমের বক্তব্য, যাঁদের রাজনৈতিক অস্তিত্বই সঙ্কটের মুখে তাঁরা যে কোনও সুরাহা করতে পারবেন না, তা সকলেই জানেন। তাই ভরসা শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেস।
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি ও বিধায়ক মোস্তাক আলম বলেন, আগুন নিয়ে খেলছে বিজেপি। এনআরসি’ই হোক বা ক্যাব, আসলে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা আজ বিপন্ন। সাধারণ মানুষ দিশেহারা। আমাদের কাছে তাঁরা ছুটে আসছেন। আমরা প্রতিটি পাড়ায় মিছিল মিটিং করে মানুষের পাশে থাকার বার্তা দেব।
তবে বিজেপি’র জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডলের বক্তব্য, বিরোধীরা যাই বলুক না কেন, দেশের প্রকৃত নাগরিকরা দু’হাত তুলে ক্যাব’কে সমর্থন করছেন। অনুপ্রবেশকারীদের দাপটের সামনে আর মাথা নিচু করে থাকতে হবে না প্রকৃত নাগরিকদের। ক্যাব এই বার্তাই দিয়েছে।