পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
সকাল ৮টা নাগাদ বেঙ্গল সাফারির পশু চিকিৎসক নিক ডোলে, খড়িবাড়ি ব্লক পশু হাসপাতালের চিকিৎসক দেবাশিস মহন্তের উপস্থিতিতে হাতি দু’টির ময়নাতদন্ত হয়। প্রায় দু’ঘন্টা ধরে ময়নাতদন্ত চলে। এদিকে হাতির মৃত্যুর খবর পেয়ে চলে আসনে এপিসিসিএফ বিপিনকুমার সুদ এবং সিসিএফ দেবাংশু মল্লিক।
রানিগঞ্জ-পানিশালি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য অসিতচন্দ্র সিংহ বলেন, ওই জায়গায় একটি বাঁক ছিল। ট্রেনের চালক তৎপরতা দেখিয়ে গতি কমালে হাতি দু’টির প্রাণ রক্ষা করা যেতে।
পশু চিকিৎসক দেবাশিস মহন্ত বলেন, পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী হাতিটি খুব সম্ভবত তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। ট্রেনের ধাক্কায় দু’টি হাতিই গুরুতরভাবে জখম হয়েছিল। হস্তিশাবক সহ অন্তঃসত্ত্বা হাতিটির ভ্রূণের মৃত্যু হয়েছে। কার্শিয়াংয়ের ডিএফও জে শেখ ফরিদ বলেন, আমরা এরজন্য আইন মেনে পদক্ষেপ নেব। এদিনই হাতি দু’টির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। পুরো ঘটনাটির তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু করা হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, এদিন যে ঘটনাটি ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। ওই ট্রেনের চালক জানিয়েছেন, লাইনে ঘন কুয়াশা ছিল। ২০০-৩০০ মিটার কাছাকাছি চলে আসার পর তিনি দুই-তিনটি হাতিকে লাইন পারাপার করতে দেখেন। ইমার্জেন্সি ব্রেকও কষা হয়েছিল। ট্রেনের কোনও ক্ষতি হয়নি। তাই ট্রেন দাঁড়ায়নি। আমরা নিজেদের মতো করে পুরো ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছি।
বনদপ্তর জানিয়েছে, মৃত হাতি দু’টির একটির বয়স আনুমানিক তিনবছর। অন্যটির বয়স ১৫ বছর। সেটি অন্তঃসত্ত্বা ছিল। রাতে টুকরিয়াঝাড় বনাঞ্চল থেকে ২৫টি হাতির একটি দল খাবারের খোঁজে খড়িবাড়ি ব্লকের ভোলকাজোত, আন্ধারুজোত, দিলসারাম এলাকায় যায়। সারা রাত ওই দলটি গ্রামে ফসল খেয়ে সকালে টুকরিয়াঝাড় বনাঞ্চলে ফেরার পথে দিলসারামে রেলের ২৯/৮৯ পিলারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। শিলিগুড়ি-কাটিয়ার ডাউন ডিইএমইউ ট্রেনের ধাক্কায় ওই দলের দু’টি হাতি গুরুতরভাবে জখম হয়। রেললাইন থেকে প্রায় ২০ ফুট দূরে ছিটকে পড়ে। বনদপ্তর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই হাতির দু’টির মৃত্যু হয়।
সকাল ৭টা নাগাদ কার্শিয়াংয়ের ডিএফও ঘটনাস্থলে পৌঁছন। হাতি মারা যাওয়ার খবর চাউর হতেই শয়ে শয়ে লোক সেখানে পৌঁছয়। কৌতূহলীদের ভিড় সামাল দিতে বনকর্মীদের হিমশিম খেতে হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে একসময়ে এসএসবি’র ৪১ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ারা চলে আসে। পাশাপাশি খড়িবাড়ি থানার পুলিস, আরপিএফ কর্মীদের আসেন। পরে গ্রামবাসীরা হাতি দু’টিকে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত এলাকাটি হাতির করিডর হিসেবে পরিচিত বলে বনবিভাগ জানায়নি। রেলের দাবি, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ২৯/৮৯ পিলার থেকে ১২ কিমি দূরে ১৫/৫ নম্বর পিলার থেকে ১৭ নম্বর পিলার পর্যন্ত এলাকাটি হাতির করিডর হিসেবে হাতির করিডর বলে তাদের জানানো হয়েছিল। শীতের মরশুমে ঘণ্টায় ৬০ কিমির কম বেগে ট্রেনের গতি থাকে। এদিন ওই ট্রেনের গতিবেগ কত ছিল তা স্পিডো মিটার চার্ট তদন্ত করে দেখা হবে বলে রেল জানিয়েছেন।